রোববার, ০৪ জুন ২০২৩, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০

চলে গেলেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠক শাহজাহান সিরাজ

আজকের দেশবার্তা রিপোর্টঃ জাতীয় বীর,মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠক, সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা শাহজাহান সিরাজ মারা গেছেন। ক্যানসারে আক্রান্ত শাহজাহান সিরাজের শারীরিক অবস্থা অনেকদিন থেকেই সংকটাপন্ন ছিল। মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে রাজধানীর এভার কেয়ার (সাবেক অ্যাপোলো) হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

তার পরিবারের সদস্য থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। একাত্তরে মুক্তির সংগ্রাম দানা বেঁধে উঠতে থাকলে ১ মার্চ স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। সিরাজুল আলম খান, শেখ ফজলুল হক মণি, আব্দুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ, আবদুল কুদ্দুস মাখন, নূরে আলম সিদ্দিকী, আ স ম আবদুর রবের মতো শাহজাহান সিরাজও ছিলেন এই পরিষদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। এর মধ্যে পরিষদের শীর্ষ চার নেতা— নূরে আলম সিদ্দিকি, শাহজাহান সিরাজ, আ স ম আবদুর রব ও আব্দুল কুদ্দুস মাখনকে বলা হতো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘চার খলিফা’। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি সময়ে ছাত্রনেতা আব্দুল কুদ্দুস মাখন মারা গেছেন।

এর ফলে ‘চার খলিফা’র দুই খলিফাই পাড়ি জমালেন না ফেরার দেশে। এদিকে, একাত্তরের ১ মার্চ সংসদ স্থগিত হলে ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন আ স ম আবদুর রব। ওই সময় সিদ্ধান্ত হয়, পরদিন পল্টনের ছাত্র জনসভায় স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করা হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ৩ মার্চ পল্টন ময়দানের বিশাল ছাত্র জনসভায় বঙ্গবন্ধুর সামনে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেছিলেন শাহজাহান সিরাজ। পরে মুক্তিযুদ্ধে মুজিব বাহিনীর অন্যতম সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মুজিবনগর সরকারের সঙ্গে তিনি মুজিব বাহিনীর পক্ষে লিয়াজোঁর দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে গড়ে তোলেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)। সেই জাসদ বহু ভাগে বিভক্ত হলে একসময় যোগ দেন বিএনপিতে। সবশেষ দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন।

বিএনপি সরকারের পরিবেশ ও বনমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী শাহজাহান সিরাজের জন্ম ১৯৪৩ সালের ১ মার্চ, টাঙ্গাইলের অবিভক্ত কালিহাতী থানার গোহাইলবাড়ী গ্রামে। ষাটের দশকে ছাত্রলীগে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে তার রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়। ওই সময় টাঙ্গাইল সাদত কলেজের ছাত্র সংসদে একবার সাধারণ সম্পাদক ও দু’বার ভিপি ছিলেন তিনি। ১৯৭০ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকও নির্বাচিত হন।