মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন যন্ত্র আবিষ্কার, করোনা শনাক্ত হবে ৯০ মিনিটে

নিজস্ব সংবাদদাতা : কোনো বিশেষ ল্যাব ছাড়াই এক ধরনের যন্ত্র দিয়ে মাত্র ৯০ মিনিটে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নির্ভুলভাবে পরীক্ষা করা যাবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীরা। ‘ল্যাব-অন-এ-চিপ’ নামে এই যন্ত্রটি দেশটির আটটি হাসপাতালে ব্যবহৃতও হচ্ছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্য বিষয়ক সংবাদদাতা জেমস গ্যালাহার এই যন্ত্র কীভাবে কাজ করে তা দেখেছেন। তিনি জানান, লন্ডনের ইমপিরিয়াল কলেজের বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন ছোট্ট একটা কম্পিউটার চিপ কীভাবে ল্যাবরেটরির কাজ করবে এবং মাত্র ৯০ মিনিটে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করবে।

ডিএনএনাজ নামের একটি সংস্থা এই যন্ত্রটি তৈরি করছে। তারা বলছে, কেউ যদি গলা বা নাকের ভেতর থেকে সোয়াব বা নমুনা নিতে পারে, তাহলেই সে এই যন্ত্রটি ব্যবহার করতে পারবে।
 
একটি নীল রঙের কাট্রিজের মধ্যে সোয়াবটা রাখতে হবে, যার ভেতর পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় রাসায়নিক আছে। এরপর কাট্রিজটি জুতার বাক্সের আকারের ছোট একটি যন্ত্রের ভেতর ঢুকিয়ে দিতে হবে, যে যন্ত্র ওই নমুনা বিশ্লেষণ করবে। ওই কাট্রিজটি একবার ব্যবহারের পর ফেলে দিতে হবে।

৩৮৬ জনের কাছ থেকে সংগ্রহ করা নমুনা ডিএনএনাজ কোম্পানির যন্ত্র দিয়ে এবং পাশাপাশি প্রচলিত ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে দুটি পরীক্ষার ফলাফল তুলনা করা হয়েছে।

ইমপিরিয়াল কলেজের অধ্যাপক গ্রেয়াম কুক বলেন, ‘দুটি পরীক্ষার ফলাফল দেখা গেছে একইরকম, যা খুবই আশ্বস্ত হবার মতো। বিশেষ করে যখন একটা নতুন প্রযুক্তি আপনি বাজারে আনার চেষ্টা করছেন তখন ফলাফলে তারতম্য না থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

তিনি বলেন, ‘অনেক পরীক্ষায় দেখা গেছে, হয়ত সেটা দ্রুত করা যাচ্ছে। কিন্তু ফলাফল নির্ভরযোগ্য নয়। আবার কোনোটায় ফলাফল নির্ভুল কিন্তু সময় লাগছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে দুটোই সফলভাবে অর্জিত হয়েছে।’

এখানে সমস্যা একটা রয়েছে। সেটা হলো, একটা বাক্স-যন্ত্র দিয়ে একবারে শুধু একটা নমুনাই পরীক্ষা করা সম্ভব। কাজেই কোনো প্রতিষ্ঠান যদি একটি বাক্স ব্যবহার করে, তাহলে সারা দিনে প্রায় ১৬ টার বেশি নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হবে না।

অধ্যাপক কুক বলছেন, ‘যেসব ক্ষেত্রে আপনার দ্রুত জানা প্রয়োজন কেউ সংক্রমিত কি না এবং একটা দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি, সেখানে এই যন্ত্র খুবই উপযোগী হবে।’

তবে সব বিজ্ঞানীই বলেছেন, এই যন্ত্র ছোট পরিমণ্ডলে উপকারী হবে। কিন্তু মারাত্মক এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকারগুলোকে গণহারে পরীক্ষার ব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে হবে।