বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সরিষাবাড়ী উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসে ৪২ লক্ষ টাকা জালিয়াতি, পিয়ন উধাও।


 

মোস্তাফিজুর রহমান,সরিষাবাড়ী প্রতিনিধিঃজামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ের মাস্টার রোল কর্মচারী শাকিবুল হাসান  নামে এক কর্মচারী জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারী কোষাগার হতে প্রায় ৪২ লক্ষ টাকা নিয়ে লাপাত্তা বলে জানাগেছে। এ ঘটনায় উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা স্নিগ্ধ রায়হান বাদী হয়ে সরিষাবাড়ী থানায় পৃথক দুটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করেছেন। সাধারণ ডায়েরী (জিডি) নং-৬৫১ (তারিখ-১৭/০২/২০২১ ইং) ও ৮৯৪ (তারিখ ২৩-০২-২০২১ ইং)।

উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, গত ২০২০ ইং সালের জুলাই মাসে সরিষাবাড়ী উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের চর জামিরা গ্রামের জয়নাল আবেদীনের পুত্র শাকিবুল হাসান  মহা হিসাব নিয়ন্ত্রক কার্যালয় থেকে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে মাস্টার রোল কর্মচারী হিসেবে উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ে যোগদান করেন। তিনি বিভিন্ন জালিয়াতি ও প্রতারণা করে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মরত সরকারী কর্মচারীর ল্যাম্পগ্রান্ট/জিপিএফ /জামানত এর ভূয়া বিলের মাধ্যমে প্রায় ৪২ লক্ষ টাকা সরকারী কোষাগার থেকে উত্তোলন করে নিয়ে উধাও হয়েছেন। গত ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১ ইং তারিখে শাকিবুল হাসান দুখু ১৩ টি বিল সমেত একটি এ্যাডভাইস যাহা অডিটর ও সুপারের স্বাক্ষরসহ উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার স্বাক্ষরের জন্য নিয়ে যায়।

এ সময় হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার নিকট ১১লক্ষ ৬৯ হাজার ৩’শ ৮২ টাকার জমাকৃত বিলের টোকেন নং-০০০০৬০৬২ (তারিখ-১৬/০২/২০২১ইং) বিলটি দেখতে চাইলে সে বিলটি নিয়ে আত্মগোপন করে। উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা বিলটি না পেয়ে তার খোঁজখবর করে ব্যর্থ হন। পরে উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা শাকিবুল হাসান দুখুর বাড়ীতে গেলে তার পিতা জয়নাল আবেদীন টাকা ফেরত দেয়ার আশ্বাস দিয়ে একটি মুচলেকা প্রদান করেন।

এ ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে একইভাবে অবৈধ পন্থায় কর্মচারী শাকিবুল হাসান দুখু প্রায় ৪২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারী) প্রাথমিক তদন্তে প্রতীয়মান হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট পত্রের মাধ্যমে অবগত করা হয়েছে বলে জানাগেছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা স্নিগ্ধ রায়হান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, শাকিবুল হাসান দুখু সরকারী অফিসে কর্মরত থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন পন্থায় প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় ৪২ লক্ষ টাকা নিয়েছে। এ বিষয়টি মহা হিসাব নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে পত্রের মাধ্যমে অবগত করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, শাকিবুল হাসান দুখু জালিয়াতি চক্রের একজন। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ তদন্ত করলে তার বিরুদ্ধে আরো  জালিয়াতি’র তথ্য বের হবে আশা করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ বিভাগের বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রক মোঃ শাহজাহান সরকার এর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি তদন্তনাধীন রয়েছে। তিনি আরও জানান সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।