শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

অফিস সহকারী নূরজাহান ৪ বছরে কোটি কোটি টাকার মালিক!

আজকের দেশবার্তা রিপোর্টঃ কোটি কোটি টাকার মালিক প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের অস্থায়ী কর্মচারী নূরজাহান। মানবপাচার মামলায় গ্রেপ্তারের পর তদন্ত সংস্থা সিআইডিও হতবাক তার বিপুল সম্পদ দেখে। এই সম্পদের উৎস কী তা খতিয়ে দেখার পাশপাশি চলছে বিদেশে তার টাকা পাচারের অনুসন্ধানও। ২৮শে মে লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশি হত্যার পর মানব পাচারের ঘটনায় পল্টন থানায় সিআইডি বাদী হয়ে একাধিক মামলা করে। দুটি মামলায় গ্রেপ্তার হয় নূরজাহান-সাত্তার দম্পতি।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের অফিস সহকারী নূরজাহান। এর আগে ছিলেন জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর ইমিগ্রেশন শাখার ডাটা এন্ট্রি অপারেটর।

তদন্ত সংস্থা বলছে- সরকারি দপ্তরের চাকরিকে সাইনবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করতেন তিনি। স্বামী আব্দুস সাত্তারের নামে নেন রিক্রুটিং এজেন্সির লাইসেন্স। আর এজেন্সির আড়ালে গড়ে তোলেন মানব পাচার চক্র।

শান্তিনগরের চামেলীবাগের একটি ভবনের পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় ছিল নূরজাহান-সাত্তার দম্পতির রিক্রুটিং এজেন্সির অফিস। অনুসন্ধানে বের হতে থাকে তার বিপুল সম্পদের তথ্য। বেইলি রোডের এই অ্যাপার্টমেন্টে একসময় ভাড়া থাকতেন এ দম্পতি। দেড় বছর আগে এই ভবনে ১৮শ’ বর্গফুটের ফ্ল্যাট কেনেন তারা, যার মূল্য দেড় কোটি টাকা।

এছাড়া ঢাকার মিরপুর ও আশুলিয়ায় তিনটি বাড়ি, বেইলি রোড, চামেলীবাগ, মীরবাগ ও কাকরাইলে চারটি ফ্ল্যাট, আফতাবনগরে দুটি প্লট, মিরপুরে আছে আসবাবপত্রের ব্যবসা। আশুলিয়া ও কুমিল্লায় কোটি কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে নূরজাহান-সাত্তার দম্পতির। কোটি টাকার গাড়িতে চলাফেরা করেন এই পরিবারের সদস্যরা।

পুলিশ বলছে, মাত্র ৪ বছরে অবৈধভাবে বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন নূরজাহান।

সিআইডি বিশেষ পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা বলেন, আমরা প্রাথমিক একটা অনুসন্ধানে জানতে পেরেছি সে খুব অল্প সময়েই অনেক সম্পত্তির মালিক হয়েছে। সে আমাদেরকে বলেছে বিদেশে লোক পাঠিয়ে এই সম্পত্তি বানিয়েছে কিন্তু এতো টাকা এভাবে আয় করা সম্ভব না। এই দম্পতি বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সি খুলে সেগুলোর যে কোটা থাকে বছরে তিনশ বা চারশ মানুষকে বাহিরে পাঠানোর তা ব্যবহার করেই মানব পাচার করতো।

নূরজাহান নিজের রিক্রুটিং এজেন্সির বাইরেও বিভিন্ন এজেন্সির লাইসেন্স ব্যবহার করে মানবপাচার করতেন। গ্রেপ্তারের পর চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে নূরজাহানকে। সিআইডির মানবপাচার প্রতিরোধ আইনে করা মামলায় অন্তর্বর্তীকালীন জামিনও পেয়েছেন এই দম্পত্তি।