বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এক লাখ টাকা পেলে সুস্থ হয়ে উঠবে মেধাবী শিক্ষার্থী মাইশা

নিজস্ব সংবাদদাতা : কয়েকদিন আগেও দুচোখ ভরা স্বপ্নের হাতছানি ছিল পলাশ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সদ্য এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থী মাইশা আক্তারের। স্বপ্ন ছিলো লেখা-পড়া শেষ করে ভালো একটি চাকরি করে সে সংসারের হাল ধরবে। লেখা-পড়ায়ও একজন ভালো শিক্ষার্থীও ছিল মাইশা। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, আজ তার নিজেরই অর্থ অভাবে চিকিৎসা বন্ধ হয়ে আছে। কোমড়ের হাড় ভেঙে পড়ে আছে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালের বারান্দার ফ্লোরে। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন, মাইশাকে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দিতে গেলে তার একটি অপারেশন করা প্রয়োজন এবং সেই অপরাশেনের ব্যয় হবে প্রায় লাখ টাকা। 
কিন্তু মাইশার বাবার পক্ষে এক লাখ টাকা জোগার করা কোনভাবেই সম্ভব নয়। কেননা সে নিজেও একটি দুর্ঘটনায় পড়ে অসুস্থ হয়ে এখন ঘরবন্ধি। তারপরও আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে ধার-দেনা করে ১৫/২০ হাজার টাকা জোগার করেছেন। যে কারণে মাইশার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার পথটি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এতোক্ষন বলছিলাম, নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকার গড়পাড়া গ্রামের দিনমজুর মোখলেছুর রহমানের ছোট মেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থী মাইশা আক্তারের কথা। গত আগস্ট মাসের ২৮ তারিখে পেয়ারা পাড়তে গিয়ে টিনের চাল থেকে পড়ে কোমড়ের হাড় ভেঙে যায় তার। বর্তমানে সে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি আছে।

জানা গেছে, বাবা মোখলেছুর রহমান মেঘনা গ্রুপে শ্রমিকের কাজ করতেন। সেখানে একটি দুর্ঘটনার শিকার হয়ে প্রায় চার বছর ধরে তিনি ঘরবন্ধি। মোখলেছুর রহমানের তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে মাইশা আক্তার তৃতীয়। তার বড় বোনের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় তার মেঝো বোন প্রাণ কোম্পানিতে চাকরি করে সংসার চালানোর পাশাপাশি ছোট বোন মাইশার লেখা-পড়ার খরচ বহন করতেন। মাইশা মেধাবী ছাত্রী হওয়ায় পরিবারের সবার স্বপ্ন ছিল তাকে লেখা-পড়া শিখিয়ে উচ্চ শিক্ষিত হিসেবে গড়ে তোলার। মাইশারও দুচোখ ভরা স্বপ্নের হাতছানি ছিল লেখা-পড়া শেষ করে চাকরি করার মাধ্যমে অভাব-অনটনের সংসারের হাল ধরার। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস। দুর্ঘটনার কারণে বর্তমানে মাইশার জীবন বাঁচানোটাই যেনো বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়েছে তার পরিবারের মধ্যে। মাইশার চিকিৎসার জন্য সরকারের সহযোগিতাসহ স্থানীয় দানশীল ব্যক্তিদের কাছে আকুল আবেদন করেছেন পরিবারের সদস্যরা।
পলাশ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, মাইশা আক্তার একজন মেধাবী ছাত্রী ছিল। গরীব ঘরের সন্তান হওয়ায় স্কুলে পড়াকালীন সময় তাকে সব শিক্ষকরা সহযোগিতা করতো। তার এমন দুর্ঘটনা সত্যিই বেদনাদায়ক। আমরা স্কুলের পক্ষ থেকে তার পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি।