শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

করোনায় সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে ৬৯ পুলিশের মৃত্যু, বর্তমানে কমছে আক্রান্ত

আজকের দেশবার্তা রিপোর্টঃ দেশে করোনা সংক্রমণের শুরুতে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে পুলিশ সদস্যরা যেভাবে আক্রান্ত হয়েছিলেন বর্তমানে সেটা অনেকটা কমে এসেছে। পুলিশ সদর দফতরের পক্ষ থেকে সময়োপযোগী পদক্ষেপ ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। করোনার শুরু থেকে শুক্রবার (২১ আগস্ট) পর্যন্ত ৬৯ জন পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।

পুলিশ সদর দফতর থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, স্বাভাবিক সময়ের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিকল্পনায় দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ শুরু করে পুলিশ। রুটিন দায়িত্বের বাইরে গিয়েও করে নানা কাজ। পুলিশের ২ লাখ সদস্য করোনার শুরু থেকেই মানুষকে সেবা দিয়ে গেছেন। এমনকি প্রথম দিকে তাদের কোনও সুরক্ষা সামগ্রী কিংবা কোনও প্রস্তুতি ছিল না। তাই করোনার শুরুতে পুলিশের অনেক সদস্য আক্রান্ত হন।

পুলিশ করোনা আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে গেছে, এমনকি মৃত করোনা রোগীর লাশ দাফনে যখন স্বজনরাও এগিয়ে আসেনি, তখন পুলিশ এগিয়ে গেছে। মুসলিম ধর্মের বাইরে অন্য ধর্মের ক্ষেত্রে মরদেহ সৎকারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। রিলিফ বিতরণের কাজ করেছে। অনেকেই পুলিশের ফেসবুকের ইনবক্সে, ট্রিপল নাইনে ফোন করে বা ক্ষুদেবার্তা দিয়ে সাহায্য চেয়েছে। গভীর রাতে পুলিশ তাদের ঘরে সাহায্য পৌঁছে দিয়েছে।

এসব কার্যক্রম চালাতে গিয়ে করোনায় সর্বমোট আক্রান্ত হন ১৬ হাজার ২৩০ জন পুলিশ সদস্য। এর মধ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশের সদস্য রয়েছেন দুই হাজার ৭৯৪ জন। আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৪ হাজার ৪০ জন। বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন এক হাজার ৯৮৬ জন পুলিশ সদস্য।

পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার জন্য রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালকে দুই সপ্তাহের মধ্যে কোভিড হাসপাতালে রূপান্তর করা হয়। ২৫০ বেডের এই হাসপাতালকে ৫০০ বেডে উন্নীত করা হয়। এছাড়া পাশের একটি ব্যারাক খালি করে সেখানে আরও ২৫০টি বেড বসিয়ে এই হাসপাতালের সক্ষমতা বাড়ানো হয়। এর বাইরেও ২৫০ বেডের আরও একটি বেসরকারি হাসপাতাল ভাড়া করা হয় পুলিশ সদস্যদের উন্নত চিকিৎসার জন্য। কোভিড চিকিৎসায় সেন্ট্রাল পুলিশ হাসপাতাল খুবই অল্প সময়ে দক্ষতার পরিচয় দেয়।

করোনার এই দুর্যোগের সময় প্রথম কয়েক দিনে কিছু সমস্যা হয়েছিল জানিয়ে পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ কর্মকর্তা এআইজি মো. সোহেল রানা বলেন, ‘আইজিপির নির্দেশনায় সারাদেশে দ্রুততম সময়ে দুই লাখ পুলিশ সদস্যের জন্য সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে মাস্ক, গ্লাভস, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই), হ্যান্ড স্যানিটাইজার ওষুধ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। পুলিশ সদস্যদের মনোবল ঠিক রাখার জন্য সার্বক্ষণিক তদারকি করেছেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।’

বর্তমান করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে ফোর্সের কল্যাণ ও দায়িত্ব বন্টনের পরামর্শ দিয়ে আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘পুলিশে করোনা সংক্রমণের হার শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে কোভিড-১৯ মহামারী প্রতিরোধ বিষয়ক হ্যান্ডবুক প্রত্যেক পুলিশ সদস্যের কাছে পাঠানো হয়েছে।’