মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা ভয়াবহ রূপ নেয়া না’গঞ্জে আইসিইউ মাত্র ৪টি

দেড় মাস কঠোরভাবে লকডাউন পালন করে মায়ের জন্য ওষুধ কিনতে মাত্র আধা ঘণ্টার জন্য বাইরে গিয়েছিলেন মেরী সুলতানা।

এর দু’দিন পর উপসর্গ নিয়ে পরীক্ষা করে ঈদের দিন দুপুরে জানতে পারেন তিনি ও তার বৃদ্ধ মা করোনা পজিটিভ।

শুধু তারাই নন, ওই পরিবারের ছোট্ট শিশুসহ ১৭ জন একই উপসর্গে ভুগছেন। একইভাবে অসুস্থ স্বামীর জন্য মাত্র ১৫ মিনিটে একটি পাঞ্জাবি কিনে বাসায় ফেরার পর রাতেই জ্বর, গলা, ব্যথায় কাতর হন সামিয়া (ছদ্মনাম)।

দু’দিন পর পরীক্ষা করে জানতে পারেন পরিবারের ৫ জনই করোনা পজিটিভ। এমন শত শত ঘটনা এখন না’গঞ্জের পাড়া-মহল্লায়।

মার্কেট ও গার্মেন্ট খুলে দেয়ায় ঈদের পর থেকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে যে আশঙ্কা করা হয়েছিল, সেই আশঙ্কাই বাস্তবে রূপ নিচ্ছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

শনিবার জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, শুক্রবার জেলায় ২০৬টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৫২ জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে।

এ নিয়ে মোট আক্রান্ত ২ হাজার ৬৮৪ জন। নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন শিল্প-কারখানার মোট ১২৮ জন শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এসব শিল্প-কারখানা শাটডাউন না করলেও সেসব প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও জেলা পুলিশ বিশেষ তদারকি করছে বলে জানা গেছে।

এদিকে জেলায় আইসিইউ বেডের সংখ্যা মাত্র ৪টি, যেটি রয়েছে কাঁচপুরের সাজেদা হাসপাতালে। নারায়ণগঞ্জে কোভিড-১৯ হাসপাতালে (খানপুর ৩শ’ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল) প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরও আইসিইউ ইউনিট চালু হয়নি।

চিকিৎসকরা অপারগতা প্রকাশ করে জানিয়েছেন, প্রতিদিন যে হারে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, সে হারে মুমূর্ষু রোগীদের আইসিইউতে দেয়াটা আমাদের জন্য অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বেডের তুলনায় রোগীর সংখ্যা কয়েকগুণ। এ ব্যাপারে খানপুর ৩শ’ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের সুপার ডা. গৌতম রায় বলেন, আইসিইউ’র জন্যই আমরা সবচেয়ে বেশি কাজ করছি।

ইতোমধ্যে ভেন্টিলেটর, সেন্ট্রাল অক্সিজেন, মনিটর চলে এসেছে। এখন শুধু বেডের আশায় আছি। দু’দিনের মধ্যে ১০টি বেড আসবে এবং ৫/৬ দিনের মধ্যে এই হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিট পুরোপুরি চালু করতে পারব বলে আশা করছি।