বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ক্ষমতাসীনদের লুটের কারণে দেশজুড়ে ত্রাণের হাহাকার চলছে: রিজভী

ক্ষমতাসীনদের আত্মসাত ও লুটের কারণে সারাদেশে ত্রাণ নিয়ে হাহাকার চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। মঙ্গলবার সকালে রাজধানীতে ‘ফিউচার অব বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠনের উদ্যোগে ঘরে ঘরে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেয়ার কর্মসূচির উদ্বোধন করে তিনি এই অভিযোগ করে। রাজারবাগে ইস্টার্ন পয়েন্টের কাছে একটি বাসার সামনে এই অনুষ্ঠান হয়।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজকে সরকারী যে ত্রাণ, এই ত্রাণ আত্মাসাত হয়ে যাচ্ছে।কাদের দ্বারা? এই সরকারি দলের লোকদের দ্বারা। হাহাকার করছে খুলনার রেল স্টেশনের শ্রমিকরা একটু ত্রাণের জন্য। কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের নার্সরা খাবার পাচ্ছে না। অথচ ক্ষমতাসীন দলের লোকজনদের বাড়িতে চাল বোঝাই হয়ে যাচ্ছে। কার চাল? জনগনের চাল। তাদের টাকায় কেনা চাল।

সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরে তিনি বলেন, যখন সব মহল থেকে বলা হচ্ছে যে, সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে এই মহামারী মোকাবিলা করতে হবে তখন আমরা দেখতে পারছি যে, সরকার একগুয়েমী করছে। ক্ষমতাসীনরা একতরফাভাবে কাজ করতে গিয়ে শুধু নিজের দলের লোকজনদের পেট ভরানোর কাজটা গত ১০ বছর ধরে যেভাবে করছে এখন সেটাই হচ্ছে। যখন মানুষ রাস্তায় মরে পড়ে থাকছে, মানুষ একটু খাবারের জন্য হাহাকার করছে, রেল স্টেশনে, পথে-ঘাটে একটা ত্রাণের আশায় মানুষ দিনের দিন সেখানে গ্রীষ্মের প্রখর রোদ্রের মধ্যে অপেক্ষা করছে অথচ তারা ত্রাণ পাচ্ছে না। ত্রাণ লুটপাট হয়ে যাচ্ছে। এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না। আমরা এখনও বলছি যে, জনগনের এই দুর্দশা লাঘব করার জন্য একসঙ্গে এগিয়ে এসে কাজ করতে হবে।

রিজভী বলেন, আজকে যারা সরকার আছেন তাদের প্রধান দায়িত্ব এই কাজটা করার। অথচ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ তারা নানা কথাই বলছেন যে, না এাণ চুরি হচ্ছে না, চাল চুরি হচ্ছে না। আমরা ঠিক মতোই দিচ্ছি। প্রতিদিনই আপনারা গণমাধ্যম খুলে দেখবেন-শুধুমাত্র চাল চুরির ঘটনা, শুধুমাত্র ত্রাণ আত্মসাতের ঘটনা।আর ওদিকে রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে আছে একটু ত্রাণের আশায়, দুঃস্থরা হাহাকার করছে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণে সরকারের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেই অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা দেখছি, স্বাস্থ্যকর্মী যারা ডাক্তার তাদেরকে ছাটাই করা হচ্ছে। কেন করা হচ্ছে? বিভিন্ন অজুহাত তুলে এই ছাটাই করা হচ্ছে।অথচ ডাক্তারদের নিরাপত্তার বিধান করছেন না, নার্সদের নিরাপত্তা বিধান করছেন না। তারা খেতে পারছেন না। আপনি আপনার একনায়কতন্ত্রের যে আচরণ, সেই আচরণটা অব্যাহত রেখেছেন। এভাবে বিশ্বব্যাপী এই মহামারীর তান্ডব, যে প্রাদুর্ভাব- এটা মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। এখনো সময় আছে, সরকার সমন্বিত উদ্যোগ নেবেন ঐক্যবদ্ধভাবে যাতে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যায় সকলকে সচেতনতার মধ্য দিয়ে, দুঃস্থ মানুষের বাড়িতে গিয়ে যাতে ত্রাণ পৌঁছিয়ে দেয়া যায় সেই ব্যবস্থাটাই গ্রহণ করবেন।

ফিউচার অব বাংলাদেশ এর এই উদ্যোগের জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন রুহুল কবির রিজভী।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফিউচার অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক শওকত আজিজ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাজেদ বিন হাসান, কে জি সেলিম, সদস্য নাহিদ রহমান পুতুল, রবিকুল হাবিব প্রমুখ।