শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ছুটিতে আসা সৌদি প্রবাসীদের টিকিটের জন্য হাহাকার

নিজস্ব সংবাদদাতা : ছুটি শেষে মার্চের ২০ তারিখ সৌদি আরবে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল মাসুদুর রহমানের। করোনা মহামারির কারণে সৌদি আরব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়ায় কর্মস্থলে ফেরা হয়নি তার। ৩০ সেপ্টেম্বর ভিসার মেয়াদ শেষ হচ্ছে, দুই দিন ধরে লাইনে দাঁড়িয়েও সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের টিকিট কাটতে পারেননি তিনি। অনিশ্চয়তায় মধ্যে দিন কাটছে মাসুদুর রহমানের।

তার মতো অনেকেই টিকিটের জন্য দিনভর অপেক্ষা করেছেন সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স সাউদিয়ার অফিসে। টিকিট না পেয়ে ক্ষুব্ধ ছুটিতে আসা সৌদি প্রবাসীরা।

জানা গেছে, সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স বাংলাদেশে ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে সপ্তাহে দু’টি ফ্লাইট পরিচালনার অনুমোদান পায়। অন্যদিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স গত সপ্তাহে  আবেদন করলেও বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেয়নি সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ। এ পরিস্থিতিতে বিমানকে বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনার অনুমোদন না দিলে সাউদিয়ার অনুমোদন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।  এ সিদ্ধান্তের খবরে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন সৌদি প্রবাসীরা।

সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) এর প্রতিবাদে মতিঝিলে বিমান অফিসে গিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। কেউ কেউ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করেন।

আজ মঙ্গলবারও (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে অবস্থিত সৌদি এয়ারলাইন্সের অফিসের সামনে কারওয়ান বাজার মোড়ে বিক্ষোভ করছেন সৌদি প্রবাসীরা। প্রায় পাঁচ শতাধিক সৌদি প্রবাসী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। সকাল ৮টা থেকে তারা বিক্ষোভ করছেন।

সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের অফিসে শনিবার থেকেই টিকিটের জন্য ঘুরছেন প্রবাসীরা। তাদের অভিযোগ, লাইনে দাঁড়ালেও টিকিট দিচ্ছে না সাউদিয়া।  রিটার্ন টিকিট থাকার পরও অতিরিক্ত ২৫ হাজার টাকা রিইস্যু করতে নিচ্ছে এয়ারলাইন্সটি। একইসঙ্গে টিকিট বিক্রি করছে ৯৫ হাজার টাকায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে রাজধানীর কাওরান বাজারে সোনারগাঁও হোটেলে সাউদিয়ার অফিসের সামনেও বিক্ষোভ করেন প্রবাসীরা।

জহিরুল আলাম নামের এক প্রবাসী বলেন, ‘ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে পৌঁছাতে না পারলে অনেকেই বেকার হয়ে পড়বে। অথচ আমরা টিকিট পাচ্ছি, লাইনের দাঁড়িয়েও। সৌদি  এয়ারলাইন্স লাইনে আসা প্রবাসীদের দাঁড় করিয়ে রেখে গোপনে বাইরে টিকিট বিক্রি করে দিচ্ছে।’

রির্টান টিকিট রিইস্যু করতে ২৫ হাজার টাকা নেওয়ায়ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রবাসীরা। ক্ষোভ প্রকাশ করে আব্দুস সালাম বলেন,  ‘আমাদের টিকিট আগেই কাটা, এখন রিইস্যু করতে কেন এত টাকা নেবে? এটা অন্যায়।’

তবে এ বিষয় জানতে যোগাযোগ করা হলেও সাউদিয়ার এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তারা   গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে অপারগত প্রকাশ করেন।

১ অক্টোবর থেকে সৌদি আরবের তিনটি শহরে আটটি বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনার অনুমোদন পেয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। যাদের রির্টান টিকিটি আছে তাদের আগে রিইস্যু করা হবে, আপাতত নতুন টিকিট বিক্রি করবে না বিমান।

এ প্রসঙ্গে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোকাব্বির হোসেন জানান, সৌদি আরব ১ অক্টোবর থেকে বিমানের বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত প্রদান করেছে। আসন বরাদ্দ আরম্ভ করার আগে ল্যান্ডিং পারমিশন আবশ্যক। কিন্তু ল্যান্ডিং পারমিশন পাওয়া  যায়নি। ফলে যাত্রীদের আসন বরাদ্দ আরম্ভ করার জন্য ফ্লাইট এখনই ঘোষণা করা সম্ভব হচ্ছে না। ল্যান্ডিং পারমিশন প্রাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে ফ্লাইট ঘোষণা করা হবে এবং যাত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবহিত করা হবে। ফ্লাইট ঘোষণার আগে কাউন্টারে অহেতুক ভিড় না করার জন্য যাত্রীদের বিনীত অনুরোধ করছি।