মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাবির স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতের দাবি

আজকের দেশবার্তা রিপোর্টঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অনলাইন ক্লাস এবং পরিস্থিতি বিবেচনায় হলগুলো খোলার বিষয়ে ১৩টি ছাত্র সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছে কর্তৃপক্ষ। ভার্চুয়াল এ আলোচনায় ছাত্র নেতারা বলেন, দেশের সার্বিক কোভিড পরিস্থিতি ও শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। আর তা সম্ভব হলে আবাসিক হল খোলা ও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরু হতে পারে।

অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশ পরিষদের সভায় অনলাইন ক্লাসের সমস্যা, সংকট সমাধান এবং পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিলে শিক্ষার্থীরা কীভাবে নিরাপদ থাকতে পারে তা নিয়ে আলোচনা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

সভায় আবাসিক হলগুলোর সার্বিক পরিবেশ ও শিক্ষার্থীদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে যাদের ছাত্রত্ব নেই তাদের হলে না থাকা এবং তথাকথিত গণরুম সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নেওয়া উদ্যোগকে ছাত্র-সংগঠনের নেতারা স্বাগত জানান। তারা এ বিষয়ে হল প্রশাসনকে সার্বিক সহযোগিতারও আশ্বাস দেন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ক্যাম্পাসে ও হলে শিক্ষার্থীদের জীবনাচার বিষয়ে একটি গাইডলাইন প্রণয়নের ওপর সভায় গুরুত্বারোপ করা হয়।

এছাড়া, ছাত্র-সংগঠনের নেতারা অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত রাখার উদ্যোগকে স্বাগত জানান। তবে তারা সব শিক্ষার্থীর অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমতার ভিত্তিতে অংশগ্রহণের জন্য চাহিদা মোতাবেক প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রযুক্তি অবকাঠামো উন্নয়ন, ডাটা প্যাকেজ ও ডিভাইস প্রদানের জন্য অনুরোধ জানান। একইসঙ্গে মূল্যায়নযোগ্য পরীক্ষা কার্যক্রম অনলাইন কার্যক্রমের আওতায় না আনার জন্যও তারা কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে আমরা আহ্বান জানিয়েছি, অনলাইন ক্লাসের আওতায় যেসব অস্বচ্ছল শিক্ষার্থী আসতে পারেনি, তাদের ডিভাইসের জন্য বা মোবাইল ডাটার খরচের জন্য তালিকা করে ইউজিসি বা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মাধ্যমে আর্থিক অনুদান দেওয়া হোক। অনলাইন ক্লাসের আওতায় না থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য রিকভারি প্ল্যানের আওতায় যেন তাদের সাপ্লিমেন্টারি ক্লাসের ব্যবস্থা রাখা হয়। একইসঙ্গে এ বছরের উন্নয়ন ফি সম্পূর্ন প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে। ক্যাম্পাস খোলার আগেই শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তা সুনিশ্চিতে পূর্ণাঙ্গ রোডম্যাপ ও গাইডলাইন প্রণয়ন করতেও বলা হয়েছে। চাকরি প্রত্যাশী তরুণেরা করোনাকালীন সংকটের কারণে বয়সজনিত জটিলতায় যেন না পড়ে, সে বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণের আশাবাদও ব্যক্ত করা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দীর্ঘ সময় ছুটি থাকার কারণে সেশনজট যেন সার্বিকভাবে সমন্বয় করে সমাধান করা হয়, সে বিষয়ে প্রশাসনিক উদ্যোগের জন্যও বলা হয়েছে ৷ এছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মুজিববর্ষে বিশেষ সমাবর্তনের মাধ্যমে সম্মাননা জানানোর আয়োজন পুনর্বিন্যাস করে করোনা সংকট অতিক্রমকালীন সময়ে সুসম্পন্ন করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অনিক রায় বলেন, সভায় ক্লাস এবং হল খোলার বিষয়ে প্রস্তাবনা চাওয়া হয়েছে। আমাদের প্রস্তাব ছিল, হল খোলার আগে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে। প্রতিদিন তিনবার করে হল পরিষ্কার করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্র উন্নত করতে হবে, গণরুম বন্ধ করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় থাকার বেডের ব্যবস্থা করতে হবে। আর যদি এসব দাবি মানা সম্ভব না হয়, তাহলে অনলাইন ক্লাসের ওপর আরও জোর দিতে হবে।

সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী এবং বিভিন্ন হলের প্রভোস্টরা সংযুক্ত ছিলেন।