দিনমজুরের ছেলে সুমনের মেডিকেলে চান্স।
মোস্তাফিজুর রহমান,সরিষাবাড়ী প্রতিনিধিঃ
নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান মোঃসুমন। এবারের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পেয়েছে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে।
পিতা মোঃ মিন্টু মিয়া একজন দিনমজুর। নিজের ঘরের থাকার জায়গা আবাদী কোন জমি জমা নেই।কখনো অন্যের জমি বর্গা চাষাবাদ করে আবার কখনো অন্যের কাজ করে চালান সংসারের খরচ। মা মোছাঃচায়না বেগম একজন গৃহিণী। ৫ সদস্যের পরিবারে ৩ ভাই-বোনের মধ্যে সুমন সবার ছোট।
জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার সরিষাবাড়ী পৌরসভার শিমলাপল্লী তাড়িয়া পাড়া গ্রামে সুমনের জন্ম।অদম্য মেধাবী ছাত্র সুমন ছোট বেলা থেকেই পড়াশোনায় বেশ মনোযোগী ছিল। তখন থেকেই যেন আকাশ ছোঁয়া লক্ষ ছিল তার। যার সাক্ষী স্কুল ও পাবলিকের প্রতিটি পরীক্ষার ফলাফল। ৫ম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃৃৃৃত্তি ও ৮ম শ্রেণিতে সাধারণ গ্রেডে বৃৃত্তি সহ ২০১৮ সালে সরিষাবাড়ী আর.ডি.এম মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হয় ময়মনসিংহের স্বনামধন্য শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজে। সেখান থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পায়।
তার একটাই লক্ষ্য ছিল সফলতা দিয়ে ভূমিহীন দিনমজুর পিতার মুখে হাসি ফোটানো। এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে মেডিকেলে ভর্তির জন্য কোন প্রকার ভর্তি কোচিং না করে ভর্তি যুদ্ধ শুরু করেন সুমন। ধরা দেয় সাফল্য। ভর্তি পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্য পান ৭০.৫০ নম্বর। তার মেরিট স্কোর দাঁড়ায় ২৭০.৫০।স্থান হয় মেধা তালিকার ২৭১৪ নম্বরে। চান্স পেয়ে এখন চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নে বিভোর সে।
সুমন জানায়, এই সাফল্যের জন্য আল্লাহর দরবারে লাখ লাখ শুকরিয়া। তার অনুগ্রহ আর মা-বাবার দোয়ায় আমার এই সাফল্য। আমি সবসময় পিতা-মাতা ও শিক্ষকদের অনুপ্রেরণাকে প্রাধান্য দিয়েছি।
সে বলে, আমি দিনমজুর বাবার সন্তান। দারিদ্রতা কি সেটা আমি বুঝি। কাজেই চিকিৎসক হয়ে আমি সমাজের হতদরিদ্র মানুষের সেবায় নিজেকে আত্মনিয়োগ করতে চাই। আমার এত দূর আসার পেছেনে আমার শিক্ষক,পরিবার,বন্ধু-বান্ধবসহ অনেকের সহযোগীতা ও অনুপ্রেরণা রয়েছে। সকলের প্রতি আমি চির কৃতজ্ঞ। সবার কাছে দোয়া চাই। আমি যেন ডাক্তার হয়ে সারা জীবন মানুষের পাশে থেকে তাদের সেবা করতে পারি