বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ন্যাপি, বিশ্বকে বানাবে আনহ্যাপি

নিজস্ব সংবাদদাতা : শিশুদের প্রাকৃতিক কর্মের স্বাভাবিক জ্বালাতনকে টিস্যু দিয়ে ঢেকে দিতে পেরেছে এই সভ্যতা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কৃত্রিম এই পন্থাটি সুখকর প্রমাণিত হয়নি। একেই হয়ত বলে সভ্যতার সঙ্কট। বিশ্ব বিশেষ করে বৃটেনে সারা বছর ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণে ন্যাপি নিয়ে এখন মাথায় হাত সেদেশের সরকারের। প্রতি বছর সেখানে ৩০০ কোটি ন্যাপি বর্জ্য তৈরি হচ্ছে। মাটি সহজে মেশে না বাচ্চাদের ব্যবহৃত এই ন্যাপি।

বিজ্ঞানীদের মতে ন্যাপি মাটিতে মিশতে লাগে অন্তত ৫০০ বছর। তাই ধুয়ে ব্যবহার করা যায় এমনই কিছু বিকল্পের পথে হাঁটতে হবে ব্রিটেনবাসীকে। একই পথ ধরতে হবে ন্যাপিপ্রেমী এই গ্রহবাসীকে।

বৃটেনে কোটি কোটি টাকার ন্যাপি তৈরির কারখানা গড়ে উঠেছে। হিসাব কষে দেখা গেছে বৃটেনের মতো উন্নতিশীল দেশে একটি বাচ্চা টয়লেট গিয়ে অভ্যস্ত হওয়ার আগে পর্যন্ত প্রায় ৬,০০০ ন্যাপি ব্যবহার করে। ফলে ভবিষ্যতে কত বর্জ্য তৈরি হবে তা সহজে অনুমান করা যায়। কিন্তু কী করে এই বর্জ্যের ব্যবস্থা করা যাবে, তাই এখন চিন্তার। এই কাজে কানাডার সংস্থা নোওয়েস্ট একটা ভালো কাজ করেও দেখিয়েছে। তারা ওয়েস্ট মিডল্যান্ডের ওয়েস্ট ব্রুমউইচে একটি কারখানা তৈরি করেছে।

তারা দেখিয়েছে কীভাবে ফেলে দেয়া ন্যাপিকে সুষ্ঠুভাবে ব্যবহার করা যায়। এক বছরে এই সংস্থা ৩৬ হাজার টন ন্যাপিকে রিসাইক্লিং করেছে। সংস্থার বিজ্ঞানীরা মনে করছেন এই পদ্ধতিতে প্রতিবছর ২২হাজার টন গ্রিন হাউস গ্যাস বের হওয়াকে রোখা যাবে। এই সমপরিমাণ গ্রিন হাউস গ্যাসে একসঙ্গে ৭৫ হাজার গাড়ি একসঙ্গে চললে তৈরি হয়। ফলে পরিবেশ বাঁচবে। ন্যাপির পাশাপাশি মহিলাদের এবং বয়স্কদের ব্যবহৃত তুলোর প্যাডকে রিসাইকেলিং করা যাবে তা নিয়েও চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে। হাসপাতাল, নার্সিংহোম, বাচ্চাদের ক্রেশ এবং মিউনিসিপাল বর্জ্য ন্যাপি সংগ্রহ করে যাচ্ছে নোওয়েস্ট।

ন্যাপি দিয়ে কী কী করা যায় তার কিছু নমুনাও দিয়েছে ওই কোম্পানি। তারা জানাচ্ছে ছাদের বসানো রুফ টাইল কিংবা প্ল্যাস্টিক, ফাইবার মধ্যে মিশিয়ে করা যেতে পারে রকমারী জিনিসপত্র। রাস্তায় বসানো বড় জলের পাইপে সহজে মিশিয়ে দেয়া যেতে পারে এই উপাদান। লন্ডন, স্কটল্যান্ডে কিছু এলাকায় জমি ভরাটের কাজও করা যেতে পারে ন্যাপি দিয়ে।

সোজা কথায়, ন্যাপি যাতে বিশ্বটাকে আনহ্যাপি বানিয়ে দিতে না পারে, তা নিয়ে আমাদের এখনই ভাবতে হবে।