বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পঁচা ও গলিত সারের প্রতিবাদে যমুনা সারকারখানায় ডিলারদের বিক্ষোভ, প্রশাসন অবরুদ্ধ

মোস্তাফিজুর রহমান,সরিষাবাড়ী প্রতিনিধিঃ দেশের সর্ববৃহৎ দানাদার ইউরিয়া সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জামালপুরের সরিষাবাড়ীর তারাকান্দিতে অবস্হিত যমুনা সার কারখানা থেকে বিদেশ থেকে আমদানি করা জমাট বাঁধা পচাঁ সার ডিলারদের জোর করে চাপিয়ে দেয়ার প্রতিবাদে সার উত্তোলন বন্ধ করে দিয়ে কারখানার প্রশাসনকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেছে। রবিবার (৭ ফেব্রুয়ারী) সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত ২ঘন্টা কারখানার প্রধান ফটকে ডিলাররা গাছের গুড়ি ফেলে অবরোধ করে রাখে। গত ৬ ফেব্রুয়ারী সকালেই ডিলাররা আমদানী করা জমাটবাধা পচাঁ সার সরবরাহ নিতে অনীহা প্রকাশ করায় কারখানা থেকে উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলাসহ মোট ১৯ জেলায় সার সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

ডিলারদের সূত্রে জানাগেছে, যমুনা সার কারখানার হাজার হাজার মেট্রিক টন বিদেশ থেকে আমদানি করা সার দীর্ঘদিন খোলা আকাশের নিচে পড়ে রোদ-বৃষ্টিতে তার গুণাগুণ নষ্ট হয়ে গেছে। বস্তার সার পাথরের মতো শক্ত, যা গুঁড়া করে দিলেও সেগুলো পাউডারের মতো মিহি হয়ে যায়। সরকার সারের চাহিদা মেটানোর নামে বিদেশ থেকে আমদানি করা সার জমাট বাঁধা, পচাঁ, নিম্নমানের এবং ওজনেও কম বলে ডিলার ও কৃষকরা দীর্ঘদিন যাবৎ অভিযোগ করে আসছে। যে কারণে উক্ত সার প্রয়োগে কৃষকদের অনীহার কারণে ডিলাররা আর্থিক ভাবে ক্ষতি’র সম্মুখীন হয়েছেন।

কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রতি ট্রাকে ১২ মেট্রিক টন সারের মধ্যে ১১ মেট্রিক টন যমুনার উৎপাদিত সার এবং সঙ্গে ১ টন বিদেশ থেকে আমদানি করা সার নেওয়া বাধ্যতামূলক করে। এর আগেও আমদানি করা সার জমাট বাঁধা, পচাঁ, নিম্নমানের সার নিয়ে ডিলারগণ উত্তোলন বন্ধ করলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েও তালবাহানা করছে। এ নিয়ে রবিবার দুপুরে কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে ডিলার, ট্রাক মালিক সমিতি, শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় প্রতি ট্রাকে ১২ মেট্রিক টন সারের মধ্যে ১৫ বস্তা আমদানীকৃত সার (কোন ভাবেই শক্ত, জমাট বাধা, বস্তা ছেড়া ফাটা থাকবেনা শর্তে) উত্তোলন করার সমঝোতা হয় বলে জানাগেছে। এই কারণে ডিলাররা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন।

তারাকান্দি ট্রাক ও ট্যাংকলড়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম মানিক জানান, আমদানিকৃত ১ মে. টন সার জমাটবাধাঁ ও গলিত, যা কৃষকের কাছে বিক্রি অযোগ্য। প্রত্যেক ডিলারের গুদামে আমদানিকৃত সার আটকা পড়ে গেছে। ফলে প্রতি ট্রাকে ১৬ হাজার টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে। প্রতিকার দাবিতে শনিবার সকাল থেকে কারখানার কমার্শিয়াল এরিয়ার ১৯ জেলায় ডিলারগণের সার পরিবহন বন্ধ রয়েছে। বিপাকে পরিবহন বিভাগের মালিক-শ্রমিকরা। এ সমস্যা নিয়ে উভয় পক্ষের আলোচনা সফল বলে তিনি জানান।

এ ব্যাপারে যমুনা সার কারখানার বিক্রয় বিভাগের ইনচার্জ ওয়ায়েছুর রহমান বলেন, কারখানায় বাইরে থেকে আমদানিকৃত ২১ হাজার মে. টন ও যমুনার উৎপাদিত ৬২ হাজার মে. টন সার বর্তমানে মজুদ রয়েছে। ডিলারদের জন্য বরাদ্ধকৃত ১২ মে. টনের মধ্যে যমুনার ১১ মে. টন ও আমদানিকৃত ১ মে. টন সার গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কিন্তু আমদানিকৃত সার নিম্নমান বলে অভিযোগ করে ডিলাররা সার উত্তোলন বন্ধ করে দিয়েছেন।