শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফ্ল্যাট পাচ্ছেন দেশের ৩ হাজার পরিচ্ছন্নতাকর্মী

নিজস্ব সংবাদদাতা : দেশের ৬৬ পৌরসভায় পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য ছয়তলাবিশিষ্ট ভবনে ৩ হাজার ৪০টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করবে সরকার। এ প্রকল্পে ১ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা ব্যয় করতে চায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। সম্প্রতি প্রস্তাবিত প্রকল্পের ওপর প্রকল্প মূল্যয়ন কমিটির (পিইসি) সভা হয়েছে।

সভার কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, নগরীতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় নিয়োজিত কর্মীদের আবাসনের ব্যবস্থা না থাকায় তারা অত্যন্ত নোংরা ও ঘিঞ্জি পরিবেশে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অর্থসংকটের কারণে সব পরিচ্ছন্নতাকর্মীর জন্য আবাসন ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। সেজন্য সরকার সিটি কপোরেশন ও পৌরসভায় পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেবে। প্রকল্পটি ৮ বিভাগের ৬৬ পৌরসভায় বাস্তবায়ন হবে। চলতি বছর থেকে ২০২৩ সালের জুন মেয়াদে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে চায় স্থানীয় সরকার বিভাগ।

টিপিপি অনুসারে প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা। ৬৬ পৌরসভার মধ্যে ৪১টিতে জমি পাওয়া গেছে। জমির পরিমাণ ১৯ দশমিক ৭৫ একর। ভূমি

অধিগ্রহণের ব্যয় ১৪৩ কোটি টাকা। বাকি পৌরসভাগুলোতে জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। স্থানীয় সরকার বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, প্রথমে প্রকল্পের আওতায় ৭ হাজার ১৭০ ফ্ল্যাট নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। তখন ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ৯৩৭ কোটি টাকা ও মেয়াদ ৫ বছর। প্রকল্প সংশোধন করে ৩ হাজার ৪০ ফ্ল্যাট নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা। প্রকল্পে ২ হাজার ১৪২ জনমাস (একজন ব্যক্তির কাজের সময়কাল) পরামর্শক বাবদ ব্যয় প্রস্তাব করা হয় সাড়ে ২৯ কোটি টাকা। তবে এত পরামর্শক ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন। ব্যয় অর্ধেকে নামিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছে তারা। প্রকল্পের আওতায় মাটি ভরাট, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, ড্রেনেজ নির্মাণ, আরসিসি সংযোগ সড়ক নির্মাণ, স্যুয়ারেজ পরিশোধন, গ্রাউন্ড রিসার্চ, রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং ইত্যাদি কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।

তারা আরও জানান, বৈদেশিক ভ্রমণ বা শিক্ষা সফর বাবদ ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হলেও পরিকল্পনা কমিশন তা কমিয়ে ৭৫ লাখ করার নির্দেশ দিয়েছে। একই সঙ্গে এই শিক্ষা সফর এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আয়োজনের পরামর্শ দিয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি জিপ, একটি পিকআপ, ৬৬টি মোটরসাইকেল কেনার প্রস্তাব দেওয়া হলেও পরিকল্পনা কমিশন তা নাকচ করে দেয়।

পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মামুন আল রশিদ বলেন, ‘প্রকল্পটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং মুজিববর্ষে অসহায়দের জন্য গৃহনির্মাণের সঙ্গেও কিছুটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। কারণ পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের আয় সীমিত হওয়ায় তাদের জীবনযাত্রার ব্যয় কম। তারা খুবই ঘিঞ্জি-অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে বসবাস করেন। তবে স্থানীয় সরকারের করা এই প্রস্তাবে কিছু ক্ষেত্রে বাড়তি বরাদ্দ চাওয়া হয়েছিল। পরে তা সংশোধনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’