শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

‘বালু খেকো’ সেলিম খানের জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে প্রেরণ

সেলিম খান।

আজকের দেশবার্তা রির্পোট: ৩৪ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় চাঁদপুরের ‘বালুখেকো’ হিসেবে আলোচিত ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সেলিম খানের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এদিন দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর এবং আসামিপক্ষের আইনজীবী শাহিনুর ইসলাম অধিকতর জামিন শুনানিতে অংশ নেন।

শুনানির সময় দুদক এ মামলার অনুসন্ধানী প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। পরে শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর সেলিম খান আদালতে উপস্থিত হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। ওই সময় তার আইনজীবী শাহিনুর ইসলাম জামিনের পক্ষে শুনানি করেন।

অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত অধিকতর জামিন শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেছিলেন। আজ দুপুরে সেলিম খান আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।

জানা যায়, গত ১৪ সেপ্টেম্বর বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে আগাম জামিন দেন। পরে তা স্থগিত চেয়ে আবেদন করে দুদক। পরবর্তীতে গত ২১ সেপ্টেম্বর সেলিম খানের জামিন স্থগিত করে ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেন চেম্বার আদালত।

এর আগে গত ১ আগস্ট সেলিম খানের বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক আতাউর রহমান বাদী হয়ে সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ মামলাটি দায়ের করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, সেলিম খান অবৈধ উপায়ে ৩৪ কোটি ৫৩ লাখ ৮১ হাজার ১১৯ টাকার সম্পদ তার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে অর্জন করে নিজ ভোগদখলে রেখেছেন।

এ ছাড়া তিনি ৬৬ লাখ ৯৯ হাজার ৪৭৭ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। সেলিম খান যে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেছেন, তা যাচাই-বাছাই করে অসঙ্গতি পাওয়া গেছে।

লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর মৌজায় সেলিম খানের ১৯ দশমিক ৮৯ একর জমি, ঢাকার কাকরাইলে আজমিন নামে একটি পাঁচতলা ভবন, কাকরাইলে ৭১৫ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ভুঁইগড় এলাকায় ১০তলা বাড়িসহ মোট ২৬ কোটি ৪২ লাখ ৩২ হাজার ২১ টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদ রয়েছে।

এ ছাড়া তার ছয়টি ড্রেজার, তিনটি প্রাইভেট কার/জিপ, একটি পিস্তল, একটি শটগান, আসবাব, পাঁচ ভরি স্বর্ণালংকার, একটি মোটরসাইকেল, ইলেকট্রনিক সরঞ্জামাদি, ৯টি সিনেমা নির্মাণ ও আমদানিতে বিনিয়োগ, ৫৮টি সিনেমা নির্মাণে অনুমতির নিবন্ধন ফি জমা, ব্যাংক হিসাবে জমা ও হাতে নগদসহ আরও ১১ কোটি ১৯ লাখ ৩৫ হাজার ৩৬৪ টাকার অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

এজাহারে আরও বলা হয়, স্থাবর ও অস্থাবর মিলে সেলিম খানের ৩৭ কোটি ৬১ লাখ ৬৭ হাজার ৩৮৫ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং পারিবারিক ও অন্যান্য বাবদ এক কোটি ছয় লাখ ৩৮ হাজার ৩১০ টাকা পাওয়া গেছে।

এসব সম্পদের বিপরীতে গ্রহণযোগ্য চার কোটি ১৪ লাখ ২৪ হাজার ৫৭৬ টাকা আয়ের তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেলেও, বাকি ৩৪ কোটি ৫৩ লাখ ৮১ হাজার ১১৯ টাকার সম্পদ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।