মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বেশিরভাগ সবজির কেজি ১০০ টাকার কাছাকাছি

নিজস্ব সংবাদদাতা : মাঝে কিছুটা দাম কমার পর বেশিরভাগ সবজির দাম আবার বেড়েছে। ৫০ টাকা কেজির নিচে এখন কোনো সবজি মিলছে না। পাঁচটি সবজির কেজি ১০০ টাকা স্পর্শ করেছে। বাকি সবজির বেশিরভাগের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকার কাছাকাছি।

শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শিম, পাকা টমেটো, গাজর, বেগুন ও বরবটির কেজি ১০০ টাকা স্পর্শ করেছে। এর মধ্যে পাকা টমেটো গত কয়েক মাসের মতো এখনও ১২০ থেকে ১৪০ টাকা এবং গাজর ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের মতো শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা।

নতুন করে দাম বেড়ে ১০০ টাকা স্পর্শ করা বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা, তা আগে ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা। ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া বেগুনের দাম বেড়ে ৮০ থেকে ১১০ টাকা হয়েছে।

এই পাঁচ সবজির পাশাপাশি স্বস্তি দিচ্ছে না অন্য সবজিগুলোও। গত সপ্তাহে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া পটলের দাম বেড়ে ৬০ থেকে ৭০ টাকা হয়েছে। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়, তা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা।

দাম বাড়ার এ তালিকায় রয়েছে কাঁচা কলা, ঝিঙা, কাঁকরোল। গত সপ্তাহে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা হালি বিক্রি হওয়া কাঁচা কলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ঝিঙার দাম বেড়ে ৬০ থেকে ৭০ টাকা হয়েছে। কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়; যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে।

বাজারে নতুন আসা ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা, তা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে। গত সপ্তাহের মতো ৩০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে মুলা। পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা।

স্বস্তি মিলছে না কাঁচামরিচ ও পেঁয়াজের দামেও। কাঁচামরিচের পোয়া (২৫০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। দীর্ঘদিন ধরেই এমন চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ। আর পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। গত মাসে ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই এমন চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ।

সবজির দামের বিষয়ে কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী মিলন সরদার বলেন, শীতের আগাম সবজির দাম বাড়ায় গত সপ্তাহে কিছু সবজির দাম কমেছিল। কিন্তু কয়েকদিন ধরে বাজারে সবজি কম আসছে। এ কারণে দাম একটু বেড়েছে। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে শীতের সবজি বাজারে পুরোপুরি না আসা পর্যন্ত দাম কমবে না।

খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী মো. আশিক বলেন, গত সপ্তাহে বরবটি ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছি। কিন্তু আজ আড়তে দাম অনেক বেশি। ১০০ টাকার নিচে বিক্রি করার উপায় নেই। বরবটির মতো পটল, বেগুন, ঢেড়সসহ বেশিরভাগ সবজির দাম বেড়েছে। আড়তের কথাবার্তা শুনে মনে হচ্ছে সামনে সবজির দাম আরও বাড়তে পারে।

রামপুরা বাজার থেকে সবজি কেনা মিনহাজুল বলেন, বাজারে সবজির দাম শুনলে মাথা গরম হয়ে যায়। সবজির দামে যে আগুন লেগেছে। বেশিরভাগ সবজির কেজি ১০০ টাকার কাছাকাছি। অনেকগুলোর দাম ১০০ টাকার ওপরে। ১০ বছর ধরে ঢাকায় আছি। সবজির এতো দাম আগে কখনো দেখিনি। করোনার এই দুঃসময়ে সবজির এমন দাম মোটেই স্বস্তি দিচ্ছে না।

এদিকে সবজির চড়া দামের মধ্যে কিছুটা কম দামে পাওয়া যাচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। গত সপ্তাহের মতো ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়।

মালিবাগ হাজীপাড়া বৌ-বাজার থেকে ব্রয়লার মুরগি কেনা ফাতেমা বেগম বলেন, আমাদের মতো গরিব মানুষের কপাল থেকে এখন সবজি প্রায় উঠে গেছে। ১০০ টাকার সবজি কিনলে একবেলাও ঠিক মতো হয় না। সে তুলনায় ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কম আছে। তাই সবজির বদলে মুরগি কিনছি। তবে হুট করে কখন মুরগির দাম বেড়ে যাবে তার ঠিক নেই।