বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভ্যাকসিন প্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার পাবে বাংলাদেশ

আজকের দেশবার্তা রিপোর্টঃ ভারতীয় ভ্যাকসিন চূড়ান্ত হলে অগ্রাধিকারের তালিকায় থাকবে বাংলাদেশ এমনটি জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা। পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন ও ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার নেতৃত্বে বুধবার (১৯ আগস্ট) ঢাকায় সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘ওয়ার্কিং লাঞ্চ’ শেষে উভয় পক্ষ সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ।

হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা সাংবাদিকদের বলেন, তাঁর এবারের ঢাকা সফর স্বল্প সময়ের জন্য হলেও অত্যন্ত সন্তোষজনক। গত মঙ্গলবার তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন। শেখ হাসিনা ভারতের পররাষ্ট্রসচিবকে বলেছেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে তিনি কারো সঙ্গে দেখা করছেন না। এরই মধ্যে সাক্ষাৎ দেওয়ায় দৃশ্যত উচ্ছ্বসিত ভারতের পররাষ্ট্রসচিব। 
শ্রিংলা বলেন, ‘আমি যে কারণ এসেছি তা হলো, আমাদের প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র মোদি) মনে করেছেন করোনার সময়ে তেমন যোগাযোগ হচ্ছে না। তবে সম্পর্ক অবশ্যই চালিয়ে যেতে হবে। আমাদের শক্তিশালী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরো এগিয়ে নিতে হবে।’ 
তিনি বলেন,করোনামোকাবেলায় ভারত কী করছে তা তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়েছেন। বাংলাদেশের মতো ভারতেও বিশাল জনগোষ্ঠী আছে। তিনি বলেন, ‘কভিড মোকাবেলায় আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। সৌভাগ্যক্রমে মৃত্যুহার কম, সুস্থতার হার উচ্চ।’

শ্রিংলা বলেন, ‘আমরাও কাজ করছি। আমরা ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের দ্বিতীয় পর্যায়ে আছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা অনেক বড় পরিসরে ভ্যাকসিন উৎপাদনে যাচ্ছি। বিশ্বের মোট ভ্যাকসিনের ৬০ শতাংশই উৎপাদন করে ভারত। যখন ভ্যাকসিন তৈরি হবে, তখন নির্দ্বিধায় বলা যায় আমাদের সবচেয়ে কাছের বন্ধু, অংশীদার ও প্রতিবেশী দেশগুলো অগ্রাধিকার পাবে।’
এদিকে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের বলেছেন, “বেশ কিছু ভ্যাকসিন ভারতে উদ্ভাবনের চেষ্টা হচ্ছে এবং ‘ট্রায়ালও’ শুরু হয়ে গেছে। আমরা প্রস্তাব দিয়েছি, আমাদের দিক থেকে যদি কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন হয় ‘ট্রায়ালের’ ক্ষেত্রে, তবে আমরা প্রস্তুত আছি।”
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ভারতের ঋণের আওতায় বেশ কিছু প্রকল্পের কাজ কভিড মহামারির মধ্যে কিছুটা থেমে গিয়েছিল। ভারতীয় পরামর্শক ও বিশেষজ্ঞরা আবার এ দেশে ফিরে আসতে শুরু করেছেন।
পররাষ্ট্রসচিব আরো বলেন, বাংলাদেশ গত মঙ্গলবার ভারতের সঙ্গে ‘এয়ার বাবল’ চালুর প্রস্তাব পেয়েছে। ভারত বেশ কিছু দেশের সঙ্গে এরই মধ্যে এ ব্যবস্থা চালু করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছি। আশা করি, দ্রুত এটি করে ফেলতে পারব।’
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, দুই দেশ যৌথ পরামর্শক কমিশনের বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাজধানীতে ভারতের সঙ্গে মিলে যৌথভাবে বা ভারতের সহযোগিতায় মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান আয়োজনের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া আলোচনা হয়েছে আগামী বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্ক উদযাপনের পরিকল্পনা নিয়েও।
সীমান্তে হত্যা’ নিয়ে তিনি বলেন, ‘এ বছরের প্রথম ছয় বা সাত মাসে সীমান্তে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে গেছে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে। এ ব্যাপারে আমাদের উদ্বেগ আমরা প্রকাশ করেছি। এ ছাড়া ভারতের কিছু অঞ্চলে আমাদের কিছু বাংলাদেশি আটকে আছে। যেমন ধুবড়ি অঞ্চলে ২৬ জন জেলে আটকে আছে। 
উল্লেখ্য, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, করোনা মহামারির কারণে বন্ধ থাকা ভারতীয় ভিসা আবারও চালু করতে ভারতকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।