শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মারা গেলেন ফ্রিল্যান্সার ফাহিম-উল করিম

নিজস্ব সংবাদদাতা : শারীরিক প্রতিবন্ধকতা জয় করে বাড়িতে বসে ফ্রিল্যান্সিং করে স্বাবলম্বী হয়ে সাড়া জাগানো মাগুরার বিস্ময়কর যুবক ফাহিম-উল করিম আর নেই। বুধবার (১১ নভেম্বর) রাত পৌনে ১১টার দিকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান বলে পারিবারিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

২২ বছর বয়সী ফাহিম ডুচেনে মাসকিউলার ডিসট্রফি (ডিএমডি) রোগে ভুগছিলেন। বিরল এ রোগের কারণে তার গোটা শরীর অচল হয়ে যায়। সচল ছিল শুধু মাথা ও ডান হাতের দুটি আঙুল। এগুলোকে কাজে লাগিয়ে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করে সংসারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনেন তিনি। নিজের আয় দিয়ে মাগুরা শহরের মোল্লাপাড়ায় জমি কিনে বাড়ি তৈরি করে মা-বাবার স্বপ্ন পূরণ করেন তিনি।

ফাহিমের বাবা রেজাউল করিম একটি বেসরকারি কোম্পানির বিপণন কর্মী। তিনি জানান, টানাটানির সংসার হলেও ভালোই কাটছিল তাদের দিন। একমাত্র ছেলে ফাহিম ২০১২ সালে জেএসসি পরীক্ষার আগে হঠাৎ শয্যাশায়ী হয়ে পড়ে। দৃঢ় মনোবল, প্রবল ইচ্ছাশক্তি ও মেধা কাজে লাগিয়ে ফাহিম সফল ফ্রিল্যান্সার হন। কাজের দক্ষতার কারণে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা ফ্রিল্যান্সার ফাহিম বিশ্বের ৩০ থেকে ৩৫টি দেশের কাজ করতেন। ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করে গত চার বছর ধরে ফাহিম মাসে গড়ে ৫০ হাজার টাকা করে আয় করেছেন। তার উপার্জনে পরিবারের সচ্ছলতা ফেরে। বোনের লেখাপড়া চলছিল। ফাহিমের কাজে খুশি হয়ে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক তাকে একটি ল্যাপটপ উপহার দিয়েছিলেন।

ফাহিমের বাবা আক্ষেপ করে বলেন, ‘বুধবার সকালে ফাহিম অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ফরিদপুর মেডিক্যালে নেওয়া হয়। দেশের বাইরে নিয়ে তাকে উন্নত চিকিৎসা করাতে পারলে পুরোপুরি সুস্থ না হলেও শারীরিক অবস্থা কিছুটা ভালো হতো।’ অর্থের অভাবে তিনি তা পারেননি বলে জানান।