বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রাজধানীর কাকরাইলে জেএমবি’র ১৭ সদস্য গ্রেফতার

সোমবার (০৪ মে) সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইল মসজিদের বিপরীত পাশের পাবলিক হেলথ কার্যালয়ের সামন থেকে  জেএমবির ১৭ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগ। গ্রেফতাররা হলেন- মো. হায়দার আলী (৪৪), মো. মাহমুদুল হাসান ওরফে মাসুম, মো. জামিরুল ইসলাম (২৪), মো. বিল্লাল হোসেন (৩৮), মো. শেখ আরাফাত ওরফে জনি (৪৮), মো. ইমরুল হাসান ওরফে ইমন (২৫), মো. সাইফুল ইসলাম (২৫), মো. মোজাম্মেল হক (৩৩), মো. শাহজালাল (৩৪), মো. আক্তারুজ্জামান (৩০), মো. মাহমুদুল হাসান ওরফে সাব্বির (২৩), মো. আবিদ উল মাহমুদ ওরফে আবিদ (২২), মো. সোহাইল সরদার (৩৩), মো. ওবায়দুল ইসলাম ওরফে সুমন (৩০), মাহমুদ হাসান ওরফে শরীফ (১৮), মো. মাজেদুল ইসলাম ওরফে মুকুল ( ২৮) ও মো. সোহাগ হাসান (২০)। কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের সদস্যরা এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের ১৯টি মোবাইল ফোন, নগদ ২ লাখ ৩৪ হাজার বাংলাদেশি টাকা ও ৯২২ আমেরিকান ডলার জব্দ করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা নিজেদের জেএমবি’র সদস্য বলে জানিয়েছেন। ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) বিভাগের এডিসি তহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি সংবাদকর্মীদের জানান, জনৈক ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ মোস্তাক বিন আরমান বাংলাদেশ থেকে ২০১৭ সালে সৌদি আরব যান এবং এখন পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করছেন। তিনি জিহাদের পক্ষে ঈমাম মাহাদীর সৈনিক হিসাবে বিভিন্ন বক্তব্য এবং গাজওয়াতুল হিন্দ নামক স্থানে মুসলিমদের পক্ষে জিহাদ করার আহবান জানিয়ে অডিও ভিডিও প্রকাশ করেন। গ্রেফতারকৃতরা তাঁর বক্তব্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ পূর্বক ঈমাম মাহাদীর সৈনিক হিসেবে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে সৌদি আরব যাওয়ার চেষ্টা করেন।
গ্রেফতাকৃতররা আরও জানান, তারা পলাতক রবিউল, সৈয়দ মোস্তাক বিন আরমানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন এবং গত মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় তারা পরস্পর যোগাযোগ করে হিজরতের সিদ্ধান্ত নেন। তাবলিগ-জামায়াতের আড়ালে সাতক্ষীরা বা বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে তারা ভারত-কাশ্মীর সীমান্ত হয়ে সৌদি আরব পৌঁছাবে। তাদেরকে বলা হয়েছিলো করোনার দুর্যোগে আকাশ থেকে এক ধরনের গজব নেমে আসবে এবং সমস্ত কিছু ধোঁয়াছন্ন হয়ে যাবে তখন সীমান্তে কোন পাহারা থাকবেনা এই সময় তারা যেন চলে আসেন।
এ বিশ্বাস নিয়ে গত ১৮ মার্চ তারা প্রথমে সাতক্ষীরা ও পরে যশোর সীমান্তের কাছে বিভিন্ন মসজিদে অবস্থান করেন ভারতে যাওয়ার জন্য। তাদেরকে আরও জানানো হয়েছিলো আগামী চল্লিশ দিন সূর্য উঠবে না, আকাশ ধোঁয়ায় ছেয়ে যাবে, কাফিররা সবাই মারা যাবে, ঈমানদারদের শুধু হালকা কাঁশি হবে, ঈমাম মাহাদির আগমন এই রমজানে সমাগত। তাই তারা যেভাবে যেন আসার চেষ্টা করে। তারা সাতক্ষীরা ও যশোর সীমান্ত দিয়ে পার হতে না পেরে ঢাকা হয়ে সিলেট সীমান্ত দিয়ে ভারতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং সে মোতাবেক তারা ঢাকায় আসেন। এডিসি তোহিদ হোসেন জানান, সৈয়দ মোস্তাক বিন আরমানের প্ররোচনায় এবং তার সঙ্গে যোগাযোগ করে ইতোমধ্যে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের চার ছাত্র গত জানুয়ারি মাসে ওমরা পালনের উদ্দেশে গমন করে আর ফিরে আসেননি। এছাড়াও বিভিন্ন সময় সাদ, কাউসার, শরীফ, তোফাজ্জল, গিয়াসউদ্দিন, আলী আজম এবং রাশেদ নামে আরও সাতজন ঈমাম মাহাদির সৈনিক হিসেবে যোগদানের উদ্দেশে সৌদি আরব হিজরত করেছেন বলে গ্রেফতারকৃতরা জানান। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে রমনা মডেল থানায় মামলা হয়েছে।