শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

লন্ডভন্ড স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, প্রয়োজন জাতীয় স্বাস্থ্য কাউন্সিল

দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা লন্ডভন্ড বলে দাবি করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব।

সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, করোনা মহামারিতে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার করুণ চিত্র ফুটে উঠেছে। করোনা প্রাদুর্ভাব চূড়ান্ত রূপ নেয়ার আগেই তা চরম অব্যবস্থাপনায় লন্ডভন্ড হয়ে পড়েছে। চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ, সাংবাদিকসহ জনগণ বেসুমার সংখ্যায় করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন, মৃত্যুবরণ করছেন।

রব বলেন, করোনার অজুহাতে নন-কোভিড রোগীদের চিকিৎসা তো একেবারেই বন্ধ। সম্প্রতি একজন ডাক্তার মেয়ের বাবা ও সরকারে কর্মরত যুগ্ম সচিব প্রায় ডজনখানেক হাসপাতাল ঘুরে ভর্তি হতে ব্যর্থ হয়ে শেষমেশ কুর্মিটোলা হাসপাতালে করুণভাবে মৃত্যুবরণ করেন। এরকম অসংখ্য ঘটনা দেশবাসীকে প্রত্যক্ষ করতে হচ্ছে। সাধারণ মানুষের করুণ কাহিনির তো অন্তই নেই।

তিনি বলেন, জরুরি মুহূর্তে জাতিকে কাঙিক্ষত সেবাদানে অক্ষমতা প্রমাণ করে যে সমগ্র স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাত শুরু থেকেই সবসময় উপেক্ষিত থেকেছে, কখনও গুরুত্ব পায়নি। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দীর্ঘ অবহেলা ও চরম উপেক্ষার কারণে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার এই করুণ দশা। রাষ্ট্রীয় বাজেটে জিডিপির অতি সামান্য অংশই স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করা হয়। দেশের চিকিৎসার ব্যবস্থা সাধারণ জনগণের চাহিদা মেটাতে পারছে কি-না, সে ব্যাপারে সকল সরকারই উদাসীন। করোনা সকলের চোখে আঙ্গুল দিয়ে জাতির সামনে আজ এই চরম সত্যটি উন্মোচিত করে দিল।

জেএসডি সভাপতি বলেন, উপেক্ষিত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও যে দেশ ও জাতির অস্তিত্ব রক্ষায় হুমকি হতে পারে তা নীতিনির্ধারকরা কখনও ভেবেও দেখেননি। অরক্ষিত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও যে রাষ্ট্র ও জাতীয় অর্থনীতিকে চরম বিপর্যয়ের মুখে ফেলতে পারে চলমান করোনা সংকট তার একটা প্রকৃষ্ট প্রমাণ।

এ লক্ষ্যে প্রয়োজন সুচিন্তিত স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদের পরিকল্পনার। সামনে নতুন অর্থবছরের বাজেট আসছে। আসন্ন বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে অবধারিতভাবেই বাজেট বাড়ানো হবে। তবে সেই বাজেট বৃদ্ধি সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমে একটি মাস্টার প্ল্যানের আওতায় হওয়াই বাঞ্ছনীয়। সে লক্ষ্যে আগামী বছরের বাজেট হতে মাস্টার প্ল্যানের আওতায় গৃহীত স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদের কার্যক্রমে অর্থায়ন করতে হবে।

একটি গণমুখী স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদের পরিকল্পনাসহ একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরির জন্য স্বার্থসংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনকে অন্তর্ভুক্ত করে একটি ইনক্লুসিভ জাতীয় স্বাস্থ্য কাউন্সিল (National Health Council) গঠন করতে হবে। জাতীয় স্বাস্থ্য কাউন্সিলের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করে গণমুখী স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।