বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সরিষাবাড়ীতে প্রশাসনের নাকের ডগায় যমুনা নদীর জেগে ওঠা চরের বালু বিক্রি

মোস্তাফিজুর রহমান,সরিষাবাড়ী প্রতিনিধিঃজামালপুরের সরিষাবাড়ীতে যমুনা নদীর জেগে ওঠা চরের বালু ও মাটি বিক্রির মহোৎসব চলছে। স্থানীয় প্রশাসনের নাকের ডগায় স্থানীয় প্রভাবশালী মহল কোনো ধরনের ইজারা ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে বালু ও মাটি বিক্রি করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ফলে সরকার লাখ লাখ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে বলে জানা গেছে। উপজেলার আওনা ইউনিয়নের কাওয়ামারা এলাকায় এ ঘটনা ঘটছে। স্থানীয় প্রশাসনের নিরবতায় এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ হতাশা বিরাজ করছে।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সরিষাবাড়ী উপজেলার আওনা ইউনিয়নের যমুনা নদীতে জেগে ওঠা বুক চিড়ে প্রবাহিত যমুনায় বর্তমান মৌসুমে পানি না থাকায় কাওয়ামারা গ্রামে বিশাল চর জেগে ওঠেছে। কয়েক মাস ধরে বিশাল স্থান নিয়ে জেগে ওঠা এই চরে আওনা ইউনিয়নের স্থল গ্রামের সঙ্ঘবদ্ধ প্রভাবশালী চক্র কাওয়ামারা এলাকার যমুনা নদীর ঘাট এলাকায় অবস্থান নিয়েছে। প্রতিদিন ওই সঙ্ঘবদ্ধ চক্রের ৪৫-৫০ জন শ্রমিক নদীর চর কেটে ট্রাকে বালু ও মাটি তুলে বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। উত্তোলিত বালুগুলো বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করা হয়। আবার তারা সেই মাটি বিক্রি করছে বাড়ির ভিটা, পুকুর, ডোবা ভরাটের জন্য। নদীর চর থেকে প্রতি ট্রাক বালুর দাম নেওয়া হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। প্রতিদিন ভেকু মেশিনেও শতাধিক ট্রাক বালু বিক্রি করা হচ্ছে। যমুনা নদীর চরের বালু মাটি বিক্রি করে সঙ্ঘবদ্ধ মহল লাভবান ছাড়াও কিছু অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীদের ছত্রছায়ায় সরকার লাখ লাখ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। এ অনিয়মের সঙ্গে স্থানীয় ভূমি অফিস জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে বন্যা কবলিত এলাকা হিসেবে গত বছর প্রায় কয়েক শতাধিক পরিবারের ঘর-বাড়ি পানির নিচে তলিয়ে যায়। ঝুকিঁপূর্ণ এলাকা হওয়া সত্ত্বেও কীভাবে প্রকাশ্যে এ ইউনিয়নে যমুনান নদীর চর কেটে অবাধে বালু বিক্রি করার সাহস পায় কি করে? এনিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে নদীর চর থেকে প্রকাশ্যে সরকারি সম্পদ চুরি করে বিক্রি করার বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও চলছে নানা সমালোচনা।বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (পবা) উপজেলা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক বলেন, নদী মাতৃক আমাদের এই বাংলাদেশ। কিছু অসাধু লোকজনের কারনে নদীর চর কেটে বালু বিক্রি করার উৎসব চলছে। তাই দ্রুত চর কাটা বন্ধে প্রশাসন সোচ্চার হবে বলে আশাবাদী।এ ব্যাপারে সরিষাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিহাব উদ্দিন আহমদ বলেন,এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে ড্রেজার দ্বারা বালু উত্তেলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।এ ব্যাপারে জামালপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ড এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাইদ বলেন, নরপাড়া- রাধা নগর যমুনা পূর্ব তীর সংরক্ষণ বাধের ২ শ কোটি টাকার ব্যয়ে তীর সংরক্ষণের কাজ শেষ হয়েছে। এ সব এলাকা থেকে যাতে কেউ বালু উত্তোলন করতে না পারে সে দিকে আমরা লক্ষ্য রাখছি।