শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সিদ্ধান্ত ক্রিকেটারদের হাতে এসময়ে অনুশীলনের পক্ষে নয় বিসিবি

ক্রিকেট যার কাছে শুধু খেলা নয়, ধ্যানজ্ঞান- সেই ক্রিকেট অন্তঃপ্রাণ মুশফিকুর রহীম ঈদের আগেই একা একা অনুশীলনের অনুমতি চেয়েছিলেন বোর্ডের কাছে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে বিসিবি তখন সে অনুমতি দেয়নি।

ঈদের পর আবার ব্যক্তিগতভাবে মাঠে ফিজিক্যাল ট্রেনিংয়ের পাশপাশি স্কিল ট্রেনিং করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল। তিনি একা নন, বোর্ড থেকে জানা গেছে, আরও কয়েকজন ক্রিকেটার নিজেদের ফিটনেস ঠিক রাখা, মানসিক দিক থেকে চাঙা রাখার পাশাপাশি ক্রিকেটীয় স্কিলগুলোও ঝালাই করতে উদ্যমী হয়েছেন।

বলার অপেক্ষা রাখে না, এগুলো স্টেডিয়ামে না গিয়ে ঘরে বসে করা সম্ভব নয়। তাই ফিটনেস ট্রেনিংয়ের পাশপাাশি স্কিল ট্রেনিং করার জন্য রাজধানীর মিরপুরের শেরে বাংলা ও বন্দর নগরী চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছেন কয়েকজন ক্রিকেটার। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে ক্রিকেটারদের শুরুতে না করে দিয়েছিল বোর্ড।

তারপর আবার কিছুদিন আগে বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটি চেয়ারম্যান আকরাম খান এবং সিইও নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজন গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘ক্রিকেটারদের অনুশীলনে ফেরার ইচ্ছে পূরণ করতে যাচ্ছেন তারা। নিয়ম মেনে শারীরিক সংস্পর্শ ছাড়া, সর্বোচ্চ একজন সঙ্গী নিয়ে ব্যাটিং-বোলিং অনুশীলন করতে পারবে ক্রিকেটাররা।

বোর্ড কর্তাদের সে কথার পর তোড়জোড় দেখে মনে হচ্ছিল কয়েক দিনের মধ্যেই শেরে বাংলা ও জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ক্রিকেটারদের কলতানে মুখর হয়ে উঠবে। শারীরিক সংস্পর্শে না এসে একা একা অনুশীলন করবেন মুশফিকরা।

কিন্তু সর্বশেষ খবর, করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় আর সবার মত চিন্তিত বোর্ড কর্তারাও। ঘর থেকে বের হওয়াই যেখানে মৃত্যু ঝুঁকি, সেখানে হোক অল্প কজন, ক্রিকেটারদের অনুশীলন নিয়ে রাজ্যের চিন্তা এসে ভর করছে বোর্ড কর্তাদের মনে। ক্রিকেটারদের স্বাস্থ্যঝুঁকির ভাবনা বেড়েছে আরও, বোর্ড আবার সতর্ক-সাবধানি।

ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান নিজেই চিন্তায় পড়ে গেছেন। রোববার রাতে আকরাম জানিয়েছেন নতুন তথ্য।

তার কথায় পরিষ্কার, বিসিবি পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে বর্তমান প্রেক্ষাপটে ক্রিকেটারদের বাসা থেকে বের হয়ে স্টেডিয়ামে গিয়ে কোনরকম অনুশীলন করাকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছে না। তারা বরং চাচ্ছেন এটা না হোক।

ক্রিকেটাররা একা একা স্টেডিয়ামে গিয়ে এককভাবে অনুশীলন করে নিজেকে শারীরিকভাবে ও ক্রিকেটীয় দিক থেকে তৈরি রাখতে চাইলেও আকরামের কথায় পরিষ্কার, পরিবারের অভিভাবকের মত বিসিবিও এর ভেতরে স্বাস্থ্যঝুঁকির শঙ্কায়।

মুখ ফুটে সরাসরি না বললেও শেষ পর্যায়ে আকরাম খান বলেই ফেলেছেন, ‘সত্যি বলতে কি, এখন যে অবস্থা চারদিকে, এর ভেতরে যতই একা একা হোক আর শারীরিক সংস্পর্শ ছাড়া অনুশীলন করুক না কেন, আমরা আসলে ক্রিকেটারদের সেই প্র্যাকটিসটাও কোনরকম উৎসাহিত করছি না।’

‘তারপরও কেউ যদি একান্তই করতে চায়, তাকে যতটুকু সম্ভব লজিস্টিক হেল্প করা হবে। অনুশীলন করার জন্য যা যা দরকার হয়, সেটা দেয়া হবে। তবে নীতিগতভাবে আমরা তাদের এখন ঘরের বাইরে স্টেডিয়ামে গিয়ে অনুশীলন করাকে বরং নিরুৎসাহিত করছি। তারপরও কেউ বা কারও যদি খুব ইচ্ছে থাকে সেটা ভিন্ন কথা। তাদের ইচ্ছেতে বাধা দেয়া হবে না।’