শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

স্কুল খোলার প্রস্তুতি ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করার নির্দেশ

আজকের দেশবার্তা রিপোর্টঃ পরবর্তী নির্দেশনা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেন খুলে দেওয়া যায় সে জন্য আগামী ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের সব ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। গতকাল শুক্রবার রাতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এই নির্দেশনা জারি করে বলেছে, খোলার পর কিভাবে প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হবে তার বিস্তারিত গাইডলাইন সব প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক স্বাক্ষরিত ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছেস্কুল, কলেজ, উচ্চ মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরযুক্ত উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের জানানো যাচ্ছে যে, এখন আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে। আপনারা জানেন যে, কভিড-১৯ অতিমারী চলাকালীন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে শিক্ষার্থী, শিক্ষক-কর্মচারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা। সেই লক্ষ্যে  শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রস্তুত করার জন্য ‘গাইডলাইন’ তৈরি করা হয়েছে। সকলকে সঙ্গে নিয়ে গাইড লাইন অনুযায়ী আগামী ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সকল শিক্ষাপ্রতষ্ঠানকে তাদের শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। যাতে ঊর্ধ্বতন কর্র্তৃপক্ষের আদেশ পাওয়া মাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া যায়।

এতে আরও বলা হয়, শুধু করোনাকালীন সমস্যা মোকাবিলা নয়, ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে এখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে স্থায়ীভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যসম্মত, নিরাপদ, আনন্দময় প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার ব্যবস্থা নিতে হবে। বিষয়টি খুবই জরুরি।

করোনা পরিস্থিতি বুঝে মার্চের আগেই সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়া সম্ভব কি না তা নিয়ে গত বৃহস্পতিবার আলোচনা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেখানে করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা, সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের ক্লাস কীভাবে শুরু করা যায় সে বিষয়ে পরিকল্পনা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর আলোকেই প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।

গতকাল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন দেশ আজকের দেশবার্তাকে জানান, গত বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মধ্যেকার ভার্চুয়াল সভায় সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে সীমিত পরিসরে স্কুল খুলে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সভায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ দুই মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ দপ্তর-সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

তিনি জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হলেও ঠিক কবে থেকে খুলে দেওয়া হবে তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে চলতি বছরের এসএসসি-সমমান ও এইচএসসি-সমমান পরীক্ষার্থীদের ক্লাস ফেব্রুয়ারিতেই শুরু করা হবে। সংক্ষিপ্ত সিলেবাস ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত শেষ করা হবে।

তিনি জানান, সভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসরণ করে দুই মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা স্বাস্থ্যবিধি কিভাবে বাস্তবায়ন করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত এক কর্মকর্তা বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু করা হলেও সকল প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা হবে না। মফস্বল পর্যায়ে যেখানে করোনার প্রাদুর্ভাব কম, সেখানকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হতে পারে। যেহেতু শহরের শিক্ষার্থীরা টিভি, অনলাইন, রেডিওতে সম্প্রচারিত ক্লাসে যুক্ত রয়েছে এবং মফস্বলের অনেক শিক্ষার্থী সেসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় শুরুতে গ্রামের স্কুল খুলে দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’