শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নিজেদের অপকর্মে বিএনপি মানুষের থেকে দূরে সরে গেছে

নিজস্ব সংবাদদাতা : নিজেদের অপকর্মের কারণে বিএনপি মানুষের থেকে দূরে সরে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাজধানীতে বাসে আগুন দেওয়ার জন্য বিএনপিকে দায়ী করে সরকার প্রধান বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে এমনিতেই মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। তারা কষ্টে আছেন। এই সুযোগে বিএনপি চাচ্ছে— মানুষের দুঃসময়টাকে কাজে লাগিয়ে সরকারের বদনাম করতে। নিজেরা ফায়দা লুটতে। তবে মানুষ এখন অন্ধ নয়। তারা সব দেখে-জানে।’

জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদনেতা এসব কথা বলেন। এর আগে বিএনপির হারুনুর রশীদ রাজধানীতে বাসে আগুন দেওয়ার প্রসঙ্গটি নিয়ে অনির্ধারিত আলোচনার সূত্রপাত ঘটান। তিনি ওই ঘটনার সংসদীয় তদন্ত দাবি করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি উঠতে চাইনি। কিন্তু সংসদ সদস্য যেভাবে কথাগুলো বললেন তা ঠিক নয়। আমার কাছে একটা রেকর্ড আছে, আমি তা নিজে শোনাব। টেকনোলজি অনেক এগিয়ে গেছে।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রী সংসদে বিএনপি নেতা এবং এক নেত্রীর গাড়ি পোড়ানো সংক্রান্ত কথোপকথন পুরোটাই শোনান। যা সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

হারুনুর রশীদকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির এমপিকে আমার সংসদের সামনের সিটে বসিয়েছি কথা বলার জন্য। কিন্তু তিনি বিভিন্ন সময় এমন এমন কথা তোলেন, সব সময় আমরা কথার উত্তর দেই না। কিন্তু আজকে তিনি যে কথাগুলো বললেন এ সম্পর্কে তার দলের তথ্য নিয়ে কথা বলা উচিত ছিল।

‘তিনি নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছেন। আমার প্রশ্ন হচ্ছে- আদৌ তারা নির্বাচন করে কিনা? নির্বাচনে তারা অংশ নেন, নমিনেশন নিচ্ছেন আর যাচ্ছেন। কিন্তু নির্বাচনের দিনে কোনো এজেন্ট দেবেন না। একটা সময় নির্বাচন প্রত্যাহার করে বলে, নির্বাচন ঠিক হচ্ছে না। আসলে জনগণের সমর্থন হারিয়েছেন তারা অনেক আগেই।’

‘২০০১ সালে চক্রান্ত করে ক্ষমতায় আসার পর সন্ত্রাস, খুন করা, নারী নির্যাতন থেকে শুরু করে এমন কোনো নির্যাতন নেই বিএনপি করেনি। হাজার হাজার মেয়েদের উপর পাশবিক অত্যাচার করানো অগ্নি সন্ত্রাস করে মানুষ পোড়ানো এটাই তাদের আন্দোলন।’

তিনি বলেন, এখন তো টেকনোলজির দিন। সব জায়গায় সিসি ক্যামেরা আছে। হাতেনাতে ধরা পড়ে যাচ্ছে। অনেক জায়গায় কারা কারা সত্যিকারে আগুন দিচ্ছে এগুলো একদম পরিষ্কার। কারণ আমার কাছে ছবি আছে। সংসদে ছবি দেখানোর সুযোগ থাকলে আমি দেখাতে পারতাম। কয়েকজন মিছিল থেকে বেরিয়েই বাসে আগুন দিচ্ছে সেই ছবি আমার কাছে আছে। রাস্তার সিসি ক্যামেরা থেকে সেগুলো নেয়া। সুতরাং আগুন দিয়ে সংসদে এসে সরকারের ওপর দোষারোপ করা- এটা তাদের অভ্যাস।

বিএনপির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এটা তাদের গোড়ায় গলদ। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসেছে হত্যা ষড়যন্ত্র করে। তার ক্ষমতা দখলটাই হচ্ছে খুনের মধ্যে দিয়ে। সে খুনের রাজনীতি, সন্ত্রাসের রাজনীতি ভালো বোঝো। দুর্নীতি করা, অর্থ পাচার করা, নানা ধরনের অপকর্ম তারা করে গেছে। কোনো কারণ নেই বাসে আগুন দিয়ে পোড়ানো। কিন্তু তারা ওটা করল নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা নেতা বানিয়েছে কাকে? খুনের মামলার আসামি, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার আসামি, যে দেশ থেকে পলাতক- তাকে বানানের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। দেশে কি এমন কোনো যোগ্য নেতা নেই যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হতে পারে?

‘ফেরারি খুনের আসামি সে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তাদের নেত্রী এতিমের টাকা আত্মসাৎ করা সাজাপ্রাপ্ত। কিন্তু তবুও তাকে বাসায় থাকতে দেয়া হয়েছে।’

এ সময় সংসদ ও অসত্য তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত না করার জন্য বিএনপিকে অনুরোধ জানান তিনি। সাথে সাথে বিএনপিকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ করার জন্য তিনি বলেন।

তিনি বলেন, আমরা দেশের মানুষের উন্নতি চাই। করোনাভাইরাসের কারণে মানুষ এমনিতেই ক্ষতিগ্রস্ত। কষ্টে আছে। আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করেছি মানুষকে সাহায্য করতে। অর্থনীতি সচল রাখতে। কিন্তু তারা মানুষের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। মানুষ অন্ধ না। সবকিছু বোঝে।