মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

চরফ্যাশনে দৃষ্টি নন্দন জ্যাকব টাওয়ার

নিজস্ব সংবাদদাতা : চারদিকে মেঘনা, তেঁতুলিয়া ও বঙ্গোপসাগর। মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে দ্বীপ উপজেলা চরফ্যাশন। উন্নয়নের ছোঁয়ায় ভোলা জেলার এ উপজেলাটি যেন পরিণত হয়েছে আধুনিক পর্যটন শহরে।
এখানেই দাঁড়িয়ে আছে স্থাপনা শৈলীর এক অনন্য দৃষ্টান্ত জ্যাকব টাওয়ার। বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে নতুন মাত্রা সংযোজন করেছে এ টাওয়ারটি।

দৃষ্টিনন্দন এ টাওয়ারটি সারাদেশে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে দ্বীপজেলা ভোলাকেও। যে কারণে গত কয়েক বছর ধরে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে নতুন করে পরিচিতি পেয়েছে ভোলা।

জেলা শহর থেকে চরফ্যাশনের অবস্থান প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে। বঙ্গোপসাগরের কোলঘেঁষা এ উপজেলায় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে ১৮তলা বিশিষ্ট অত্যাধুনিক জ্যাকব টাওয়ার।

চারদিকে সবুজ আর প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা ছোট ছোট দ্বীপচর, গাছ-গাছালি আর ম্যানগ্রোভ বন, মনোমুগ্ধকর কুকরী-মুকরী ও বঙ্গোপসাগরের কোলঘেঁষা তারুয়া দ্বীপ নিয়েই গঠিত এ উপজেলা। অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এ লীলাভূমিতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন ভ্রমণপ্রিয় মানুষেরা।

উপজেলা সদরে অবস্থিত এ জ্যাকব ওয়াচ টাওয়ারটি থেকে ১০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত দেখা যায়।

টাওয়ারটির উঁচুতে উঠে টেলিস্কোপ দিয়ে আশপাশের নদী-সাগর-চরাঞ্চল-ম্যানগ্রোভ বন আর লোকালয়ের নৈসর্গিক দৃশ্য দেখে মন জুড়াতে পারেন পর্যটকরা। টাওয়ারটি দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা থেকে শত শত মানুষ ভিড় জমান।

২১৫ ফুট উঁচু এ টাওয়ারটি ৮ মাত্রার ভূমিকম্প সহনীয়। এতে রয়েছে ক্যাপসুল লিফ্ট। এছাড়া রয়েছে উচ্চ ক্ষমতার বাইনোকুলার। যা দিয়ে বহুদূর পর্যন্ত দেখা যায়।

উঁচু টাওয়ার আর ফ্যাশন স্কয়ার- সব মিলিয়ে এর সৌন্দর্য ছড়িয়ে গেছে পুরো শহরে।

স্থাপত্যশৈলীর কারণে পর্যটকদের কাছে ‘জ্যাকব টাওয়ার’যেন এক অনন্য স্থাপনা। শুধু তাই নয়, রাতের বেলায় ভিন্ন পরিবেশ লক্ষ্য করা যায়। চারদিকে বাহারি আলোকসজ্জা। শহরের এক প্রান্তে আলো আর অন্য প্রান্তে সবুজের হাতছানি। কোথাও লাল, কোথাও নীল, আবার কোথাও বা সবুজ আলোয় আলোকিত। কোথাও আবার আলো আর রঙের মন মাতানো মিশ্রন। চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জার কারণে দিনের আলোর চেয়ে রাতে জ্যাকব টাওয়ারের সৌন্দর্য যেন কয়েকগুণ বেড়ে যায়।

টাওয়ারটি নির্মাণের পর চরফ্যাশন উপজেলার ফ্যাশন স্কয়ার নামের এ এলাকার চেহারাই বদলে গেছে।

২০ কোটি টাকা ব্যয়ে টাওয়ারটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৩ সালে। ২০১৮ সালে এর কাজ শেষ হয়। ওই বছরই রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এ টাওয়ার উদ্বোধন করেন। দেশের পর্যটন বিকাশে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি চরফ্যাশনকে সারাদেশের কাছে পরিচিত করে তুলছে জ্যাকব টাওয়ার।

ভোলা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের নামে এ টাওয়ারটির নামকরণ করা হয়েছে।

যেভাবে যাওয়া যাবে জ্যাকব টাওয়ারে: ঢাকা থেকে ঢাকা-চরফ্যাশন রুটের লঞ্চে উঠে চরফ্যাশনের বেতুয়া বা ঘোষেরহাট ঘাটে নামতে হবে। এরপর রিকশা, মোটরসাইকেল, সিএনজি বা ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা/ইজিবাইকে উঠে চরফ্যাশন সদরে নামলেই দেখা মিলবে জ্যাকব টাওয়ারের। এছাড়া ঢাকা-ভোলা রুটের লঞ্চে উঠেও জেলা সদরঘাটে নেমে বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাস টার্মিনালে গিয়ে বাসে সরাসরি সড়ক পথে চরফ্যাশন যাওয়া যাবে। সেখান থেকে রিকশায় বা অটোরিকশায় উপজলা সদরে নামতে হবে। রাত থাকার জন্য চরফ্যাশনে কয়েকটি উন্নতমানের আবাসিক হোটেল রয়েছে।