শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পাপুলের আরো চার সহযোগী নজরদারিতে

লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের আরো চার সহযোগীকে নজরদারিতে রেখেছেন কুয়েতের তদন্তকারীরা। মানবপাচার, মুদ্রাপাচার ও শ্রমিক নিপীড়নের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেপ্তার এমপি পাপুলের পুরো নেটওয়ার্ক চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন তাঁরা।

কুয়েতের দৈনিক আরব টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাপুলকে নিয়ে তদন্তের পরিধি দিন দিন বাড়ছে। পাপুলের দেওয়া তথ্যানুযায়ী নতুন করে চারজনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে জনশক্তিবিষয়ক কর্তৃপক্ষের দুজন পরিচালক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্নেল এবং একটি কম্পানির স্বত্বাধিকারী ব্যবসায়ী নারী রয়েছেন।

কুয়েতের দৈনিক আল কাবাস পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৯ জন ব্যক্তিকে ঘিরে তদন্ত চলছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে ভবিষ্যতে এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।

তদন্তসংশ্লিষ্ট একটি সূত্রের বরাত দিয়ে দৈনিক আল কাবাস পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন অনেক তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। সেগুলো ব্যবহার করে পাপুলের অপকর্মের নেটওয়ার্কের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।

সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, পাপুলের কাছ থেকে ঘুষ ও উপহার গ্রহণকারী হিসেবে তদন্তে যার নামই আসুক না কেন তাকে তদন্তের আওতায় আনা হবে।

কুয়েতের সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমপি পাপুল কুয়েতে তিনজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে ২১ লাখ কুয়েতি দিনার (প্রায় ৫৮ কোটি টাকা) ঘুষ দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। এর পরও তাঁর বার্ষিক মুনাফা ছিল ২০ লাখ দিনার (প্রায় ৫৫ কোটি ১৯ লাখ টাকা)।

কুয়েত থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে, এমপি পাপুলের বিরুদ্ধে মানবপাচার, মুদ্রাপাচার ও শ্রমিক নিপীড়নের বিষয়টি কুয়েতে স্থানীয়দের মধ্যেও আলোচনায় আছে। দেশটির পার্লামেন্টে এরই মধ্যে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কুয়েত সরকার এমপি পাপুলের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে কঠোর মনোভাব দেখিয়েছে। অপরাধ প্রমাণ হলে পাপুলের পাঁচ থেকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানা হতে পারে। কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাস এমপি পাপুলের বিষয়ে কুয়েত সরকারের কাছে জানতে চাইলেও আনুষ্ঠানিক কোনো জবাব পায়নি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, কুয়েতের কাছ থেকে অভিযোগের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জানার পর বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, এমপি পাপুলের ইস্যুটি স্পর্শকাতর। কুয়েতে চলমান তদন্তে বাংলাদেশ হস্তক্ষেপ করবে না। আর এটি করার তেমন সুযোগও নেই। তা ছাড়া এমপি পাপুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে বাংলাদেশেও তদন্ত চলছে। এমপি পাপুলের স্ত্রী ও শ্যালিকার দেশ ত্যাগের ব্যাপারে বাংলাদেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

এদিকে আগামী ৬ জুলাই এমপি পাপুলের বিরুদ্ধে কুয়েতে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ উত্থাপনের কথা রয়েছে। এর আগ পর্যন্ত পাপুলকে কারাগারেই থাকতে হবে। তাই শিগগির তাঁর মুক্তির কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।