শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মেগা প্রকল্পের গতি থমকে গেছে

মেট্রোরেল প্রকল্পে দেশি-বিদেশি অনেকেই কাজ করেন। গত ২৬ মার্চ সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর শ্রমিকরা চলে যান, যে কারণে এ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি থেমে যায়। জানা যায়, সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশি শ্রমিকরা কাজ করতে আগ্রহী হলেও বিদেশিরা অনুৎসাহী। ফলে মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ আপাতত বন্ধ। শুধু মেট্রোরেল নয়, করোনার প্রাদুর্ভাবের ফলে সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাওয়া অন্যান্য চলমান মেগা প্রকল্পের কাজের অগ্রগতিও থমকে গেছে। তবে ব্যতিক্রম পদ্মা সেতু।

সেতু বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত মে পর্যন্ত পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের মোট কাজের অগ্রগতি প্রায় ৮০ শতাংশ। এটি ছাড়া বাকি সব মেগা প্রকল্পের অগ্রগতি উল্লেখ করার মতো নয়। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে, মেগা প্রকল্পগুলোর কাজের অগগতি পর্যালোচনায় আজ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ডক্টর আহমেদ কায়কাউস এতে সভাপতিত্ব করবেন।

জানা গেছে, মে পর্যন্ত মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি মাত্র ৪৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ। জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে এ প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকার অংশ ৭৬ শতাংশ। বাকি অর্থ বাংলাদেশ সরকারের। অপরদিকে, পদ্মা সেতুর পুরোটাই বাস্তবায়িত হচ্ছে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে, যার প্রাক্কলিত মোট ব্যয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, করোনার প্রভাবে অনেক প্রকল্পের বাস্তবায়ন পিছিয়ে পড়েছে। এই সংকটে কীভাবে কাজের গতি বাড়ানো যায় সে জন্য বৈঠক ডাকা হয়েছে। এতে সংশ্নিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও প্রকল্প পরিচালকদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। কীভাবে কাজের গতি বাড়ানো যায় সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, মেগা প্রকল্পের কাজের নিয়মিত তদারক করতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে পৃথক একটি মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই এ কমিটির প্রধান। তিনি ব্যক্তিগতভাবে এসব প্রকল্প নিবিড়ভাবে তদারক করেন। প্রতি তিন মাস অন্তর বৈঠক করেন। পরিকল্পনা সচিব নুরুল আমিন বলেন, মেগা প্রকল্পে চাহিদা অনুসারে নতুন এডিপিতে বরাদ্দ নিশ্চিত করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, বাজেট পাশের পর কাজের গতি আসবে।

বর্তমানে পদ্মা সেতুসহ ১০টি মেগা প্রকল্প রয়েছে, যা ‘ফার্স্ট ট্রাক’ প্রকল্প নামে পরিচিত। চলতি অর্থবছরের মে পর্যন্ত বাস্তবায়নাধীন মেগা প্রকল্পের মধ্যে পদ্মা রেল লিঙ্ক প্রকল্পের বাস্তবায়ন হার ২৪ শতাংশ। এই প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ২৫ শতাংশ। রাশিয়ার অর্থায়নে আলোচ্য প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। বাগেরহাটের কয়লাভিত্তিক রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের বাস্তবায়ন হার ৪৯ শতাংশ। এর প্রাক্কলিত ব্যয় এক লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া পায়রা বন্দর প্রকল্পের বাস্তবায়ন ৬৬ শতাংশ, দোহাজারী-ঘুনধুম রেললাইন প্রকল্প ২৬ শতাংশ।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, নতুন এডিপিতে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দও দেওয়া হয়েছে। কমিশনের একটি সূত্র বলেছে, ১ জুলাই থেকে থেকে যাতে এসব প্রকল্পের কাজ জোরেশোরে বাস্তবায়ন শুরু হয় সে লক্ষ্যে প্রকল্প পরিচালকদের নির্দেশ দেওয়া হবে।