শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

একাদশ জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশন শুরু হচ্ছে আগামীকাল

নিজস্ব সংবাদদাতা : একাদশ জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশন শুরু হচ্ছে আগামীকাল রবিবার (৮ নভেম্বর)। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ-২০২০’ উপলক্ষে বিশেষ এই অধিবেশন বসছে।

এ অধিবেশনের মূল আকর্ষণ বঙ্গবন্ধুর ওপর রাষ্ট্রপতির স্মারক বক্তৃতা। রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনা শেষ হলে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিলও পাস হবে এই অধিবেশনে।

আগামীকাল সন্ধ্যা ৬টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এ অধিবেশনকে বিশেষ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। অধিবেশনের প্রথম দিনে শোক প্রস্তাব ও অধ্যাদেশ উত্থাপন করা হবে। পরদিন সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় বিশেষ অধিবেশনের কার্যক্রম শুরু হবে।

এদিন অধিবেশনের শুরুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য ও কর্মময় রাজনৈতিক জীবন নিয়ে স্মারক বক্তৃতা করবেন। এরপর এই স্মারক বক্তৃতার ওপর আলোচনার জন্য একটি সাধারণ প্রস্তাব আনা হবে। ওই প্রস্তাবের ওপর সরকার ও বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যদের আলোচনা শেষে তা পাস হবে।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে সতর্কতার সঙ্গে বিশেষ অধিবেশন বসবে। অধিবেশনের শুরুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বঙ্গবন্ধুর কর্মময় জীবনের ওপর স্মারক বক্তৃতা করবেন। এরপর বঙ্গবন্ধুর ওপর সাধারণ আলোচনা হবে। করোনা পরিস্থিতির কারণে বিদেশি অতিথিরা না থাকলেও অধিবেশনকে স্মরণীয় করে রাখতে সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, বিশেষ অধিবেশনকে সামনে রেখে সংসদ সদস্য, সাংবাদিকসহ সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করোনার নমুনা পরীক্ষা চলছে। সংসদ ভবনের মিডিয়া সেন্টার ও মেডিক্যাল সেন্টারে এই নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। করোনা নেগেটিভ ব্যক্তিরাই বিশেষ অধিবেশনে প্রবেশ করতে পারবেন। এই অধিবেশনেও সংসদ সদস্যরা রোস্টার ভিত্তিতে অংশ নেবেন।

তবে রাষ্ট্রপতির স্মারক বক্তৃতার দিন করোনা নেগেটিভ সব সংসদ সদস্য অধিবেশনে যোগ দিতে পারবেন। এদিন প্রধান বিচারপতি, তিন বাহিনীর প্রধান, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টারা, বিদেশি কূটনীতিক, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, সমাজের সুধীসমাজের প্রতিনিধিসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা সংসদ গ্যালারিতে উপস্থিত থাকবেন।

সংসদ ভবন ঘুরে দেখা গেছে, বিশেষ অধিবেশনকে সামনে রেখে সংসদ ভবনের অধিবেশন কক্ষে স্পিকারের আসনের পেছনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি টানানো হয়েছে। সংসদ ভবনের লেকে ভাসানো হয়েছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী দৃষ্টিনন্দন দুটি নৌকা। দেশের স্বাধীনতা ও উন্নয়নের প্রতীক এই নৌকা তৈরি করেছে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন। সংসদ লাইব্রেরিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০০ বাণী নিয়ে আলো-ছায়ার দৃষ্টিনন্দন কোলাজ করা হয়েছে।

সংসদ ভবনের দক্ষিণ-পশ্চিম কোনায় প্যান্ডেল করে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে আলোকচিত্র ও প্রামাণ্য দলিলে পাকিস্তানের গণপরিষদ, স্বাধীন দেশে নতুন সংবিধান প্রণয়ন ও সংসদে বঙ্গবন্ধুর কাজগুলো প্রদর্শন করা হবে। একটি রাষ্ট্রের জন্ম, সংবিধান প্রণয়ন ও সংসদীয় গণতন্ত্রের জন্য বঙ্গবন্ধু যা কিছু করেছেন তা তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি সংসদে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া বক্তব্যও বাজানো হবে। এ ছাড়া সংসদ ভবনের ভেতরে-বাইরে বর্ণিল সাজে সাজানো হচ্ছে।

জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর ই আলম চৌধুরী বলেন, ‘শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে বিশেষ অধিবেশনের কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। কোনো ধরনের শৈথিল্য দেখানো হবে না। অধিবেশনের আলোচনা, সাজসজ্জা ও প্রদর্শনীতে বঙ্গবন্ধুর জীবন, কর্ম, দর্শন, সর্বপরি মহান এই নেতার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের উল্লেখযোগ্য দিক তুলে ধরা হবে। চার দিনের বিশেষ আলোচনা শেষে অধিবেশনের সাধারণ কার্যক্রমও চলবে।’

মুজিববর্ষ উপলক্ষে গত ২২ মার্চ সংসদের বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করা হলেও দেশে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি বেড়ে যাওয়ায় তা স্থগিত করেন রাষ্ট্রপতি।