শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে প্রধান বিচারপতি

আজকের দেশবার্তা রিপোর্টঃ সুপ্রিম কোর্টের বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

আইনজীবীদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, “ঢালাওভাবে নয় সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দিন। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না।”

অনিয়ম-দুর্নীতি, নিয়মিত কোর্ট চালুসহ নানা বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব কথা বলেন প্রধান বিচারপতি।

শনিবার বিকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল এ বৈঠকে আপিল বিভাগের সব বিচারপতি এবং অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমও অংশ নেন।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, “মাননীয় প্রধান বিচারপতি বলেছেন সুপ্রিম কোর্টের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দিন, তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহন করব। তিনি বলেছেন অনিয়ম, দুর্নীতি বা নানা অব্যবস্থাপনা রোধে বার-বেঞ্চকে একযোগে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।”

সুপ্রিম কোর্টে অনিয়িম-দুর্নীতি বন্ধে আইনজীবী সমিতির সুনির্দিষ্ট বক্তব্য ছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সভার শুরুতে সমিতির পক্ষ থেকে আইনজীবীদের নানামুখী সমস্যা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরি এবং সমস্যা সমাধানে অবিলম্বে টাস্কফোর্স গঠনসহ বিভিন্ন দাবি জানাই।

“আমরা বলেছি অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের প্রতিনিধি, সুপ্রিম কোর্টের প্রতিনিধি ও বারের প্রতিনিধিদের নিয়ে একজন বিচারপতির নেতৃত্বে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হোক। তাছাড়া বার এবং বেঞ্চের নিয়মিত বৈঠকের বিষয়ে একটা প্রস্তাব ছিল, উনারা (প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের বিচারপতিরা) একমত হয়েছেন, আমাদের সাথে নিয়মিত বৈঠক করবেন। প্রধান বিচারপতি বলেছেন- ‘আমার দরোজা বন্ধ না। আমার কাছে যেকোনো সময় সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।”

রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, “সুপ্রিম কোর্টে ঘুষ, দুর্নীতি, নানারকম অব্যবস্থাপনা যে আছে, এই ব্যাপারটা কেউই অস্বীকার করেননি। এটা নির্মূলের ব্যপারে সবাই একমত হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের পবিত্রতা রক্ষার করার জন্যই সকল ধরনের অনিয়ম, দুর্নীতি নির্মূল করতে হবে।

“মাননীয় বিচারপতিরা এও বলেছেন, যেখানে কথিত দুর্নীতির অভিযোগে তিন বিচারপতিকে তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, সেখানে স্টাফ, কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নিতে পারব না।”

নিয়মিত কোর্ট চালুর বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক বলেন, “মাননীয় প্রধান বিচারপতি বলেছেন একচুয়াল এবং ভার্চুয়াল দুইভাবেই কোর্ট চলবে।

“সমস্ত মামলা এফিডেবিট করে একচুয়াল ফাইল হবে। এখন আর অনলাইনে ফাইল জমা হবে না। নানারকম প্রস্তুতির জন্য আরও দুই-তিনদিন সময় লাগবে। বুধবার নাগাদ হয়তো শুরু হতে পারে। আর আপিল বিভাগ হয়ত ভার্চুয়ালি চলবে।”

এ বৈঠকের আগে সুপ্রিম কোর্টে দুর্নীতি, অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনজীবী সমিতিকে স্মারকলিপি দেয় ‘দুর্নীতিবিরোধী সাধারণ আইনজীবীবৃন্দ’ নামের একটি ফোরাম।