শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মতলব উত্তরের মোহনপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বেহাল দশা

নিজস্ব সংবাদদাতা : চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের বেহাল দশায় চিকিৎসা সেবা প্রদান দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে।  মূল্যবান ওষুধপত্রসহ সরঞ্জামাদি ঝুঁকির মধ্যে রেখে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র পরিচালনা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি ১৯৮৪ সালে নির্মাণের পর থেকে সংস্কারের অভাবে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে ভবনটি তৈরির কারণে ৬টি কক্ষের প্রতিটি দেয়ালে ফাঁটল ধরেছে। এছাড়া দেয়াল ও ছাদের পলেস্তারাসহ বড় বড় অংশ ভেঙে পড়ছে।  ওষুধপত্র ও  অন্যান্য জিনিসপত্র রেখে জীবনের ঝুঁঁকি নিয়ে এটি প্রতিনিয়ত পরিচালনা করা হচ্ছে।  বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য ওয়্যারিং করা তার ও বোর্ড ঝুঁলে পড়েছে। যে কোন সময় মারাত্মক দুর্ঘটনার আশংকা দেখা দিয়েছে।  ফলে গরিব রোগিরা এখানে এসে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিকিৎসা সেবা নিতে বাধ্য হচ্ছে।  ৬টি কক্ষ বিশিষ্ট একতলা ভবনটি পুনঃনির্মাণের ব্যবস্থা করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত সদিচ্ছার প্রতিফলন স্বাস্থ্য সেবা মানুষের দোঁরগোঁড়ায় পৌঁছে দিতে অসহায় ও সুবিধা বঞ্চিত মানুষের নির্ভরযোগ্য স্বাস্থসেবা প্রতিষ্ঠান হিসেবে এটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।

মোহনপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার ডা. অঞ্জন কুমার মজুমদার বলেন, এই কেন্দ্রে প্রতিদিন শত শত রোগির চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ প্রদান করা হয়।  এখানে সকল প্রকার ওষুধ রোগিদের বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়ে থাকে।  ডায়বেটিস পরীক্ষা, ওয়েট মেশিন, প্রেসার মাপা যন্ত্র, শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়ে থাকে।  বিশেষ করে গভর্বতী মাকে এখান থেকে নিয়মিত প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। গভর্বতী মাকে নিয়মিত ভাবে দুরবর্তী গ্রাম থেকে শহরে অথবা সদর হাসপাতালে এনে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা সম্ভব হয় না।
ইউনিয়র পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা কুলসুম আক্তার ডলি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অবকাঠামো একেবারই ব্যবহার অনুপযোগী।  যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সব সময় আতংকের মধ্যে থেকে স্থানীয় মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দিতে হয়।
চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা জানা, এখানে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মধ্যেও সব সময় বিল্ডিংয়ের ছাদ ধসে পড়ার আতংক বিরাজ করে।  এখানে রোগীরা শরীরের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে পরামর্শ করার জন্য আসে।  কিন্তু এ কেন্দ্রে এসেই শুরু হয় আতংক।  ভয়াবহ ভগ্নদশা রোগীদের স্বাস্থ্যসেবার প্রধান অন্তরায়।  গ্রামের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষেরা যখন সরকারের ডাকে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে আসে তখনই এধরনের অজানা আতংক সত্যিকার অর্থে খুবই দুঃখজনক।

সরকার প্রতি বছর বাজেট কর্মসূচি ঘোষণা করলেই দেখা যায়, প্রায় ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সেবা খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ প্রদান করেন।  অথচ দীর্ঘকাল ধরে কমিউনিটি ক্লিনিক এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের অবকাঠামোর কোন পরিবর্তন হয়নি।  গ্রামের মানুষ এখন কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রমুখি।
উপসহকারী মেডিক্যাল অফিসার ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, মোহনপুর ইউনিয়নে কয়েকটি চর রয়েছে।  স্থানীয় রোগী ছাড়াও চরাঞ্চলের রোগী এখানে বেশি। প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ জন রোগীকে আমি সেবা দিয়ে থাকি।