শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যারিস্টার সুমন লকডাউনের নিজের অবস্থার কথা তুলে ধরলেন

করোনায় লকডাউনের মধ্যে নিজের অবস্থার কথা তুলে ধরেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। তিনি বলেন, ‘আমার মত লোকেরই এখন টাকার অভাব। আমার হাতে এখন টাকা নেই। আমি দশ লাখ টাকা নিয়ে ঢাকা থেকে এসেছিলাম তা দিয়ে দশ টন চাল ও ডাল কিনেছিলাম। এখন আমার ঘরে খাবার নেই।’ নিজের ফেসবুক লাইভে এসে এ কথা বলেন তিনি।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘পরম করুনাময় আল্লাহর নামে শুরু করছি। আপনারা জানেন আমি ঢাকা থেকে এসেছি একমাস হয়েছে। আমি ভাটির ভেতরেই।’ ‘হাইকোর্ট সুপ্রিম কোর্ট পালা ফেলে রেখে আমি একমাস বাড়ির মধ্যে বন্দি আছি। ভাবছিলাম যে এবার আর বাঁচবো না মনে হয়। আমেরিকা, লন্ডন যেভাবে মানুষ মরছে, আমি শিওর ছিলাম, ভেবেছিলাম, মনের মধ্যে একটা বাড়ি দিয়েছিল, এবার বাঁচবার সম্ভাবনা কম।‘ তিনি বলেন, ‘তবে, আমাদের যে চরিত্র, তাতে আল্লাহর রহমত ছাড়া বাঁচার কোনো উপায় নেই। মানুষকে বলে দেয়া হয়েছে ছয় ফুট তিন ফুট দূরে দূরে থাকুন। আমরা আরও পাঞ্জা পাঞ্জি করি। জড়িয়ে ধরে আরও কাছাকাছি। এখানে আল্লাহর রহমত ছাড়া মানুষের বাঁচার কোনো উপায় নেই।’ তিনি মানুষের অভাবে কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘বিদেশে লন্ডন আমেরিকা যারা আছে, তারা মরলে করোনায় মারা যাবে। আর আমাদের সমস্যা হলো, আমরা দুইদিন ঘরের মধ্যে থাকলে, আমাদের খাবার নেই। আমরা খাবারের অভাবে মারা যাবো।’ তিনি বলেন, ‘আমার মত লোকেরই এখন টাকার অভাব। আমার হাতে এখন টাকা নেই। আমি দশ লাখ টাকা নিয়ে এসেছিলাম তা দিয়ে দশ টন চাল ও ডাল কিনেছিলাম। এখন আমার ঘরে খাবার নেই। আপনারা জানেন যে, আমি একটা ফাউন্ডেশন করেছি, আমার বাবা-মার নামে, এর্শাদ আম্বিয়া ফাউন্ডেশন।’ ‘এ ফাউন্ডেশনে বিভিন্ন ধরনের মানুষ আমাকে সাহায্য করছে গরিবদের খাওয়ানোর জন্য। মানুষ যদি আমাকে টাকা না দিত তাহলে আমি আপনাদের সাহায্য করতে পারতাম না। এটা দেখে আমার মনে হয়েছে আপনার মনের মধ্যে যদি এক নম্বরে থাকে আর সত্যিই যদি আপনি মানুষের সেবা করতে চান তা হলে আটকে থাকবেন না। টাকা দিয়ে এটাই মানুষ প্রমাণ করেছে।‘ সুমন বলেন, ‘আমি ব্যারিস্টার হিসাবে যতদিন চুনারুঘাটে আছি। আপনারা রোগে যদি না মারেন, আমি আপনাদের না খেয়ে মরতে দেব না ইনশাল্লাহ।’

তিনি বলেন, ‘আপনাদের আমি কথা দিয়েছি। আপনাদের এলাকার সন্তান আমি, মিনিস্টার হয়ে লাভ কি হতো যদি আমার এলাকার মানুষ না খেয়ে মরে।’ তিনি তার জানাযার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমার জানাযায় ঢাকার মানুষ এসে পড়বে না আমার জানাযা পড়বে চুনারোঘাটের মানুষ। চুনারুঘাটের মানুষের বিপদে যদি আমি না থাকি তবে কোন সময় থাকবো।’ করোনা ভাইরাসে মারা গেলে বাপের লাশ ছেলেও ধরে না। তাই আমি এখানে এমনভাবে এসেছি আমি যদি মারা যায় লাশটা ঠেইল্যা যেন বাবার কবরে পাশে ফেলে দিতে পারেন। ব্যারিস্টার সুমন ভাইরাসের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘ভাইরাস হয়তো বেশিদিন থাকবে না শেষ হয়ে যাবে। ভাইরাস যদি চলে যায় এইটা দেখা যাবে যে কে কে মরার ভয়ে ঘরে লুকিয়েছিল আর কে কে মরার ভয় উপেক্ষা করে বৃষ্টির মধ্যে ভিজে মানুষের পেছনে দাঁড়িয়েছিল?